সরাসরি কথা বলার সুযোগ 'দিদি' মমতার সঙ্গে, ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক তৃণমূলের
এখনও ঘোষণা হয়নি ভোটের দিনক্ষণ। কিন্তু ভোট প্রচারে কোনও খামতি রাখতে চাইছে ন শাসক-বিরোধী কোনও দলই। তবে প্রচারে বাম-কংগ্রেস জোটের থেকে অনেকেটাই এগিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূল। ইতিমধ্যে একাধিক জেলা সফর সেরে ফেলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জায়গা ছাড়তে নারাজ বিজেপিও। পরিবর্তন যাত্রার নামে ২৯৪টি বিধানসভা আসনে ঘুরছে বিজেপি রথ। কিন্তু সমস্ত কিছুকেই ছাপিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল ক্যাম্পেন। গত কয়েকদিন আগেই আইটি সেলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে কার্যত ভোকাল টনিক দিয়ে গিয়েছেন অমিত শাহ। সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া তো বটেই, হোয়াটস গ্রুপ তৈরি করে প্রত্যেকটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ আইটি সেলকে। বিজেপিকে রুখতে কাজ করছে পালটা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাও। সোশ্যাল মিডিয়াতে পালটা প্রচার তৃণমূলের। পিছনে থেকে ঘুটি সাজাচ্ছে ভোট কৌসলির সংস্থা। এবার ভোটের আগে কার্যত মাস্টারস্ট্রোক পিকের সংস্থার। ভোটের আগে একেবারে দিদির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ!
“দিদির দূত” অ্যাপ
সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা ডিজিটাল ক্যাম্পেন কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা গত লোকসভা নির্বাচনে বুঝতে পারে শাসকদল তৃণমূল। কার্যত ডিজিটাল ক্যাম্পেনকে সামনে রেখেই বাংলায় কার্যত ১৮টি লোকসসভার দখল নেয় বিজেপি। এবার বিজেপির নজরে বাংলা দখল। আর তা অখল করতে ইতিমধ্যে বিজেপির আইটি সেলকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও পালটা প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকে সামনে রেখে লোকসভার পর থেকেই ঘুটি সাজাতে শুরু করে তৃণমূল। ইতিমধ্যে দিদি কে বলো থেকে শুরু করে একগুচ্ছ কর্মসূচি চলছে। ভোটের মুখে এবার দিদির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ। "দিদির দূত" অ্যাপ এনেছে তৃণমূল। এই অ্যাপ চালু হওয়ার ৮ দিনের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষেরও বশি মানুষ ব্যবহার করছেন এটি।
সরাসরি দিদির সঙ্গে লাইভে যোগাযোগ করতে পারবেন
বাংলার রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা আবেগ। অনেকেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নয়, বাড়ির মেয়ে হিসাবে দেখে। আর সেটা ভালোই বোঝে শাসকদল। বিষয়টির টের পেয়েছেন প্রশান্ত কিশোরও। আর তাই ভোটের শেষবেলায় সরাসরি মমতার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ। দিদির দুতে অ্যাপ ইউজাররা সরাসরি দিদির সঙ্গে লাইভে যোগাযোগ করতে পারবেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি কথা বলা যাবে দিদির সঙ্গে। ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলেছেন, জানিয়েছে তৃণমূল। এছাড়াও সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং সর্বশেষ খবরের আপডেট পাওয়া যাবে এই অ্যাপে। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নেওয়া নয়া উদ্যোগ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্যও মিলবে এই অ্যাপে। ব্যবহারকারীরা তাঁদের সমস্যাগুলি সরাসরি দিদির কাছে লিখেও জানাতে পারবেন। অ্যাপটি "গুগল প্লে" স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
‘দিদির দূত’ এবং ‘মোদীপাড়া’
কোনও তৃণমূল নেতাকে নয়, অনেকেই সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা জানাতে চান। সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠি, কাগজ ছুঁড়ে দেন। সেদিকে নজর রেখেই দিদির দূত অ্যাপ তৃণমূলের। অন্যদিকে গত কয়েকদিন আগেই 'মোদীপাড়া' অ্যাপের উদ্বোধন করেন অমিত শাহ। এই অ্যাপের মাধ্যমে বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচি, কেন্দ্রীয় সরকারের নানান প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিটি অনুষ্ঠানের লাইভ কভারেজ দেখতে পাওয়া যাবে। বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মূল লক্ষ্য এই অ্যাপের মাধ্যমে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনো। সব মিলিয়ে ভোটের আগে কার্যত জমে উঠেছে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে ডিজিটাল ক্যাম্পেন। তবে ভোটের শেষ হাসি কে হাসবে সেটাই এখন দেখার।