'শয়তান লোক'-এর মুখে মমতা-প্রশংসা শুনে আনন্দে গদগদ তৃণমূল শিবির
বুধবার নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার পর একটি স্থানীয় চ্য়ানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে কল্যাণবাবু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার উন্নয়নের জন্য গত ৩ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে, ফলে আমরা খুশি।
তবে যাঁর প্রশংসায় নরেন্দ্র মোদী পঞ্চমুখ তিনি অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় প্রকাশ্যে এবিষয়ে কোনও কথা বলেননি। এদিন লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ওপর জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমি সব সময় সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলেছি। যেখানে রাজ্যগুলি পরস্পরের থেকে শিখবে। কেন্দ্রীয় সরকারও রাজ্যের থেকে শিখতে পারে। ভালো কাজকে সব সময় স্বাগত জানাতে হবে। বাংলার উদাহরণও নিন। ৩৪ বছরে রাজ্যটার কী দুর্দশা হয়েছিল! সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করছেন।"
লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীকে বারে বারে আপত্তিকর শব্দে আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কখনও গাধা, ভোঁদা, হরিদাস পাল, শয়তান কত কিছুই না আখ্যা দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীকে। মোদীও পাল্টা সারদা কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়ে সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছিলেন।
কিন্তু সে তো ছিল ভোটের আগের কথা। ভোটপরবর্তী অঙ্কটা পাল্টে গিয়েছে অনেকটাই। তাই তো এখন 'শয়তানের' প্রশংসাও স্বস্তি দিচ্ছে তৃণমূল শিবিরে। চরম বিরোধিতার পথ অবলম্বন করে মোদীর জয়ের পরেও তাঁকে সৌজন্য অভিনন্দনটুকু জানাননি মমতা। অথচ এখন তাঁর মুখেই নিজের প্রশংসা শুনে আনন্দে ডগডগ মুখ্যমন্ত্রী। এবার মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান কী হবে? নয়া সরকারের সঙ্গে মৈত্রীর পথেই যাবেন নাকি দিদিমণি।
রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই দিদির প্রশংসা করে বাংলাকে কাছে আনে চাইছেন মোদী। এদিকে বিজেপি লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যাওয়ায় জাতীয় রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব হারিয়েছে তৃণমূল। ফলে নয়া সমীকরণ যে তৈরি হতেই পারে তা বলাই বাহুল্য। তাই এখন একগুয়েমি ছেড়ে দিদিমণি বিচক্ষণ রাজনৈতিক কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন কি না সে দিকেই তাকিয়ে বাংলা।