অধিবেশন শুরুর আগেই স্থগিত! রাজ্যপালের ‘কৌশলী’ পদক্ষেপের ব্যাখ্যা রাজ্যের
বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগেই সমাপ্তি ঘোষণা করে দিলেন রাজ্যপাল। শনিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের টুইটেু পর এমনটাই সাধারণভাবে মনে হবে। কিন্তু আদতে তেমন কোনও ঘটনা নয়, রাজ্যপালের টুইটের ব্যাখ্যা দিয়ে জানাল রাজ্য সরকার।
বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগেই সমাপ্তি ঘোষণা করে দিলেন রাজ্যপাল। শনিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের টুইটের পর এমনটাই সাধারণভাবে মনে হবে। কিন্তু আদতে তেমন কোনও ঘটনা নয়, রাজ্যপালের টুইটের ব্যাখ্যা দিয়ে জানাল রাজ্য সরকার। রাজনৈতিক মহল রাজ্যপালের এই টুইটকে একটা কৌশলী পদক্ষেপ বলে মনে করছে।
রাজ্যপাল টুইটে লিখেছেন, সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারা প্রয়োগের অধিকার রয়েছে তাঁর। সেই অধিকার বলে ১২ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে তিনি রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত রাখার ঘোষণা করছেন। রাজ্যপালের এই টুইটে তোলপাড় পড়ে যায়। এই ঘটনাকে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাতের চরম অবস্থান বলেও ব্যাখ্যা করতে শুরু করে দেন অনেকে।
এই অবস্থায় রাজ্যপালের টুইট নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে রাজ্যের পরিষদয়ী মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানান রাজ্যের শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। রাজ্য সরকারে তরফে জানানো হয়েছে, শীতকালীন অধিবেশন ১৭ নভেম্বর শেষ হয়ে গেলেও রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের কারণে ফাইলটি রাজভবনে পাঠানো হয়নি।
পরিষদীয় দফতর থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি ফাইলটি রাজভবনে পাঠানো হয়। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যপাল অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করে দিয়ে ওই টুইটটি করে। রাজ্য সরকারের তরফে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, এটা গত অধিবেশনের সমাপ্তির ঘোষণা। তা টুইট করে রাজ্যপাল কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে আসার পর থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত লেগে রয়েছে। সম্প্রতি বিধানসভার সঙ্গে তাঁর সংঘাত চরম সীমায় পৌঁছয়। বিধানসভায় নব নির্বাচিত বিধায়কদের শপথের অধিকার প্রশ্নে অধ্যক্ষের সঙ্গে সংঘাত ঘটে। সম্প্রতি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানেই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে অধ্যক্ষের সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। এবার তিনি বিধানসভার অধিবেশন স্থগিতের কথা ঘোষণা করেন।
বিধানসভা থেকে রাজভবনে যাওয়া একাধিক বিল তিনি আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ করে আসছে রাজ্য। বিধানসভার সমাপ্তি বিলে স্বাক্ষর করে একদিকে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের অভিযোগের জবাব দিয়েছেন, একইসঙ্গে বাজেট অধিবেশনে তাঁকে এড়িয়ে রাজ্য সরকার কোনও উদ্যোগ নিলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পথও প্রশস্ত করে রেখেছেন রাজ্যপাল।
রাজ্য সরকারের তরফে আবার এমন ব্যাখ্যাও সামনে এসেছে যে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে বিধানসভার দুটি অধিবেশন হয়েছে। একটি বাজেট অধিবেশন, দ্বিতীয়টি শীতকালীন অধিবেশন। ১৭ নভেম্বর শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করে দেন। ফলে পরের অধিবেশন ডাকতে রাজ্যপালের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই পরিষদীয় দফতরের। উল্লেখ্য, সংসদীয় রীতি অনুযায়ী অধিবেশন শুরুর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তরফে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যের তরফে রাজ্যপালের অনুমতির প্রয়োজন হয়।