তৃণমূলের পথেই ছত্রধর মাহাতো! পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে 'বিশেষ বার্তা'
ছত্রধর কি তাহলে ফিরছেন তৃণমূলেই! পার্থর সঙ্গে বৈঠকের পরই এল বিশেষ বার্তা
রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় জেল খেটে মুক্তি লাভের পর থেকেই জল্পনা চলছিল ছত্রধর মাহাতোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে। জল্পনা চলছিল, তিনিই কি হবেন জঙ্গলমহলে মমতার ট্রাম কার্ড। মঙ্গলবার তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ফের সেই জল্পনাই জোরদার হল। ছত্রধরকে নিয়ে বিশেষ বার্তাও দিলেন পার্থ।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়-ছত্রধর মাহাতো বৈঠক
পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন ছত্রধর মাহাতোর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ছত্রধর তৃণমূলে এলে ভালোই হবে। তিনি জনসাধারণের কমিটি গড়ে সাধাণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। তাঁর কাজ জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য। আমাদেরও কাজ মানুষের উন্নয়নের জন্য। জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য।
জঙ্গলমহলে হারানো জমি ফিরে পেতে
২০০৯ থেকে জেলের অন্ধকারে কেটেছে তাঁর। সমস্ত আইনি জটিলতা মিটিয়ে ও মামলার ফাঁস কাটিয়ে ছত্রধর ফের ফিরেছেন লালগড়ে। এবার তিনি কোন দলে যোগ দেবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের মত, তাঁকে ট্রাম কার্ড করেই জঙ্গলমহলে হারানো জমি ফিরে পেতে চাইবে তৃণমূল।
জনসাধারণের কমিটির নেতা থেকে রাষ্ট্রদ্রোহী তকমা!
জঙ্গলমহলে জনসাধারণের কমিটির নেতা ছিলেন তিনি। একার হাতে সিপিএমকে তিনি শুইয়ে দিয়েছিলেন লালগড়ে। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সফর চলাকালীন ল্যান্ডমাইনে বিস্ফোরণকাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মাওবাদী তকমার পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। এছাড়া আরও অনেক মামলা হয় তাঁকে ঘিরে।
মামলা থেকে মুক্ত হয়ে জঙ্গলমহলে ফিরতেই
এখন সমস্ত মামলা থেকে তিনি মুক্ত। ফিরছেন জঙ্গলমহলে। লালগড়ে ফিরে তিনি কোন দলের মুখ হয়ে ওঠেন, তা নিয়ে জল্পনার মাঝেই পার্থর সঙ্গে বৈঠক হল। তাঁর মুক্তির খবর পেতেই তৃণমূল ব্লক সভাপতি তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নিয়েছিলেন। লালগড়ে ফিরতেই তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এবার খোদ পার্টির মহাসচিব বৈঠক করলেন ছত্রধরের সঙ্গে।
পুরভোট ও আসন্ন বিধানসভা ভোট-প্রস্তুতির সন্ধিক্ষণে
ছত্রধর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতি করেছেন একটা সময়ে। তারপর মমতা যখন জঙ্গলমহলের বাঁকুড়ায় কর্মিসভায় ব্যস্ত, তখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছত্রধরের বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আবার আসন্ন পুরভোট ও আসন্ন বিধানসভা ভোট-প্রস্তুতির সন্ধিক্ষণে এই বৈঠক গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সিপিএম আমল থেকে তৃণমূলের দ্বিতীয় মেয়াদে
২০০৮-এর নভেম্বরে শালবনির জামবেদিয়ায় জিন্দল কারখানার শিল্যান্যাস সেরে মেদিনীপুরে ফেরার পথে ভাদুতলায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে মাওবাদীদের মাইন বিস্ফোরণের মুখে পড়েন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ তখনই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে ছত্রধর মাহাতোর নাম। পরবর্তীতে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনাতেও অভিযোগ ওঠে ছত্রধর মাহাতদের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক বেশে একটি সভা থেকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো-সহ ৬ জনকে।