মমতায় আস্থা নেতৃত্বে ক্ষোভ! একুশের ভোটের আগে কম্পন ধরে গিয়েছে জেলা তৃণমূলে
দিন কয়েক আগে দল ও মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তারপর হাওড়া তৃণমূলের আর এক স্তম্ভ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ছেড়েদিলেন মন্ত্রিত্ব। আর বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াও বেসুরো বাজছেন। কিন্তু মজার ব্যাপার তাঁরা কেউই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নয়, অভিমান স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তাতেই একুশের আগে কম্পন ধরে যাচ্ছে তৃণমূলের।

মমতা নিজে সক্রিয় হননি দলে ভাঙন রুখতে
এখন প্রশ্ন উঠছে, একুশের নির্বাচনকেকে প্রেস্টিজ ফাইট মনে করে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসরে নেমে পড়েছেন। কিন্তু নেতা-নেত্রীদের দলে ধরে রাখার ব্যাপারে কেন তিনি সক্রিয় নন। শীর্ষ নেতৃত্বকে দিয়ে তিনি মান ভাঙানোর চেষ্টা করছেন, তা যখন ফেল করছে- কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সক্রিয় হচ্ছেন না!

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি নিজে ব্যাটন ধরতেন
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের দিয়ে চেষ্টা না চালিয়ে, তিনি যদি একবার কথা বলতেন, তাহলে সব সমাধান হয়ে যেত। অন্তত শুভেন্দু-রাজীবদের মতো নেতা-মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ব্যাটন ধরতেন, তাহলে একুশের আগে দলের এত ক্ষতি হত না!

রাজীবের ইস্তফা প্রমাণ করল দলের সব চেষ্টা বৃথা
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং শেষের দিনে বৈঠকে ছিলেন অভিষেক ও পিকে। কিন্তু বৈঠক করেও শুভেন্দুকে আটকে রাখা যায়নি। তারপর বেসুরো রাজীবের সঙ্গে আলোচনা চালাতে শুরু করেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন রাজীবের ইস্তফা প্রমাণ করল সেই চেষ্টাও বৃথা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে আস্থাশীল রাজীব-লক্ষ্মীরা
আর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আবার ইস্তফার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকার বার্তা দিলেন। বললেন খারাপ লাগা আছে, তবু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঋণ তিনি শোধ করতে পারবেন না। তাঁকে জনপ্রতিনিধি বা মন্ত্রী করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ থাকবেন। এই বলে কান্নায় ভেঙেও পড়েন।

লক্ষ্মী-রাজীব-বৈশালীর ক্ষোভ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে
আবার লক্ষ্মীরতন শুক্লাও আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে ইস্তফা চান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থাজ্ঞাপনও করেন তিনি। এদিকে বৈশালীও দলনেত্রীর প্রতি বা শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। কিন্তু ক্ষোভ ছিল জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। লক্ষ্মীরতন বা রাজীবেরও ক্ষোভ জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে।

জোলায় গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে বিরাট ভাঙনের মুখে তৃণমূল
রাজীবের ক্ষেত্রে অরূপ রায়, আবার লক্ষ্মীরতন এবং বৈশালী ডালমিয়ার ক্ষেত্রেও সেই অরূপ রায়। তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিয়েই চেয়ারম্যান পদে সরিয়ে দিয়েছিল। লক্ষ্মীকে সভাপতি করেছিল, তাতেও সমস্যার অন্ত হয়নি। হাওড়া তৃণমূলে বড় করে দেখা দেয় জেলার গোষ্ঠীকোন্দল, যার জেরে বিরাট ভাঙনের মুখে তৃণমূল।

তৃণমূল-বিজেপির তুমুল সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠল কোচবিহারের মাখপালা