লক্ষ্য ২০২১! 'হিন্দু বিরোধী' ট্যাগ মুছতে 'নরম হিন্দুত্ববাদ'কে আলিঙ্গন তৃণমূল কংগ্রেসের
সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ এতদিন দোষারোপ করা হয়েছে তৃণমূলকে। বিজেপি এই ইস্যুতে বারবার তৃণমূলকে নিশানা করেছে। তৃণমূল এবার বিজেপির পালের সেই হাওয়া কেড়ে নিল হিন্দু পুরোহিতদের জন্য ভাতা ঘোষণা করে।
সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ এতদিন দোষারোপ করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। বিজেপি এই ইস্যুতে বারবার তৃণমূলকে নিশানা করেছে। তৃণমূল এবার বিজেপির পালের সেই হাওয়া কেড়ে নিল হিন্দু পুরোহিতদের জন্য ভাতা ঘোষণা করে। পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এই নরম হিন্দুত্ব গ্রহণ সুপরিকল্পিত কৌশলের একটি অংশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
'হিন্দু বিরোধী' ট্যাগটি মুছে্ ফেলতে
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তৃণমূল এখন 'হিন্দু বিরোধী' ট্যাগটি মুছে্ ফেলতে ' নরম হিন্দুত্ববাদ'কে আলিঙ্গন করতে মরিয়া। ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর আই প্যাক টিমের সদস্যরা সতর্কতার সঙ্গে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। পরিকল্পনা করেই ব্রাহ্মণ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে, সনাতন ব্রাহ্মণদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। এবং দুর্গা পূজা কমিটিগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সনাতন ব্রাহ্মণ পুরোহিতকে সহায়তা
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন দলের সিনিয়র নেতারা দাবি করেছেন যে, ৮,০০০ সনাতন ব্রাহ্মণ পুরোহিতকে সহায়তা ও বিনামূল্যে আবাসন প্রদানের পদক্ষেপটি তাদের দলের মস্তিষ্কপ্রসূত। তবে বিরোধী বিজেপি বলছে, এটি পদ্ম শিবিরকে আটকানোর লক্ষ্যেই করা হয়েছে। হিন্দু ভোটের ভিত অটুট রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই
তৃণমূলের বরিষ্ঠ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায় জানান, "আমরা বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমাদের লক্ষ্য জনগণ ও সম্প্রদায়ের লোকদেরকে সাহায্য করা। আমাদের দলের কোনও ধর্মীয় অ্যাজেন্ডা নেই।" যদিও ক্ষমতাসীন দল হিন্দু পুরোহিতদের আর্থিক সহায়তা দিতে কেন আট বছর সময় নিয়েছিল, তা ব্যাখ্যা করতে পারেনি।
ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে
ইমাম এবং মোয়াজ্জিনরা গত আট বছর ধরে এই জাতীয় সুবিধা ভোগ করে চলেছে। ২০১৯ সালে কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে "অসাংবিধানিক এবং জনস্বার্থ বিরোধী" হিসাবে প্রত্যাখ্যান করার পরে ওয়াকফ বোর্ডের মাধ্যমে তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
হিন্দুবিরোধী শক্তি হিসাবে দেখানোর চেষ্টা তৃণমূলকে
টিএমসি সদস্যদের একটি অংশ অবশ্য স্বীকার করেছে যে, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ বেল্টে বিজেপি বিগত দু-তিন বছরের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেছে। বিজেপি আমাদের হিন্দুবিরোধী শক্তি হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। তাদের সদস্যরা হিন্দুত্বের ধারক-বাহক হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই আমরা জনগণ, বিশেষত হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এই বার্তাটি পৌঁছে দিতে চেয়েছিলাম।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় ক্ষতি
তিনি বলেন, "আমরা হিন্দুবিরোধী বলে অভিযোগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় দলটির অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এটিকে পরিবর্তন করা দরকার, তবে একই সাথে আমরা সংখ্যালঘুদেরও আলাদা করতে পারি না। আমাদের এই ব্যবধান মুছে ফেলতে হবে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হারানো জমি ফিরে পেতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।