তৃণমূলের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি রত্নার, শোভনকে কি ইঙ্গিত দিলেন মমতা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই রত্না চট্টোপাধ্যায়ের দায়িত্ব কমানো হয়েছিল। বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির পর এবার পুর-ওয়ার্ডের সাংগঠনিক কাজেও বিরতি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই রত্না চট্টোপাধ্যায়ের দায়িত্ব কমানো হয়েছিল। বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে তাঁর অব্যাহতির পর এবার পুর-ওয়ার্ডের সাংগঠনিক কাজেও বিরত থাকতে বলা হল তাঁকে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন হঠাৎ করেই এই সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
রত্নাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, কেন
প্রশ্ন উঠেছে রত্নাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে কি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ফেরার পথ প্রশস্ত করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস? এতদিন শোভন আসবে আসবে করেও তৃণমূলে ফিরতে পারেননি। তাঁর জন্যই দুয়ার খুলে দিল তৃণমূল, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।
শোভন বিজেপিতে, দায়িত্ব সামলেছেন রত্না
শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই রত্না কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। দলের কাউন্সিলর হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল শোভনের, তা করে গিয়েছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। তারপর দলের তরফ থেকে তাঁকে ওই ওয়ার্ডের সাংগঠনিক দায়িত্বও দেওয়া হয়।
শোভনের কেন্দ্রের দায়িত্ব রত্না, অব্যাহতিতে প্রশ্ন
রত্নার মাথার উপরে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি পাশের কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনিই গাইড করে দিতেন রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। একটা সময় শোভনের কেন্দ্র বেহালা পূর্বেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রত্নার উপর। শোভন-বান্ধবী বৈশাখী নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর রাতারাতি রত্নাকে সরিয়ে দেওয়া হয় ওই দায়িত্ব থেকে।
১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি
যদিও রত্না চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি ওই গুরুদায়িত্ব নিতে চাননি। তিনি শুধু কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব রেখেছিলেন নিজের কাঁধে। বলেছিলেন, তিনি রাজনীতিতে নতুন, একই একটা বিধানসভার দায়িত্ব তিনি নিতে পারবেন না, তিনি শুধু ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডটাই রাখতে চেয়েছিলেন। এখন সেই দায়িত্ব থেকেও বিরত থাকতে বলা হল শোভন-পত্নীকে।
শোভন কি ফিরতে চলেছেন তৃণমূলে, জল্পনা
রত্নাকে দায়িত্ব থেকে বিরত থাকতে বলায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে, শোভন আবার ফিরতে চলেছেন তৃণমূলে। তাই পথ পরিষ্কার করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। রত্না কিছুদিন আগে জোর দিয়েই বলেছিলেন, শোভনকে ঘরে ফিরতে হবে। তবেই তিনি ফিরবেন তৃণমূলে। কেননা তাঁর জন্য আত্মত্যাগ বরাবরই করে এসেছেন তিনি এবং তাঁর সন্তানরা।
একুশের আগে ফিরতে পারেন শোভন
তাই রত্না ফের আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত। তিনি শুধু চান শোভন যদি ফিরে আসেন। শোভন ঘরে ফিরবেন কি না, তা বলবে ভবিষ্যৎ, কিন্তু তিনি তৃণমূল ফিরতে পারেন শীঘ্রই। সেই জল্পনা এখন শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই চর্চাই চলছে সর্বত্র।
মমতার ডাকে সাড়া কি দেবেন শোভন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, যাঁরা মনে করেন ভুল করে বিজেপিতে গিয়েছেন, তাঁরা চাইলে ফিরে আসতে পারেনষ তৃণমূলের দরজা তাঁদের জন্য খোলা রয়েছে। তারপর বিপ্লব মিত্র, প্রশান্ত মিত্র, হুমায়ুন কবীরদের মতো অনেকেই ফিরে এসেছে বিজেপিতে। এবার কি তবে শোভনের পালা?
এক বছর সক্রিয় নন শোভন, থেকেছেন অন্তরালেই
শোভন বিজেপিতে গিয়েও সক্রিয় হননি রাজনীতিতে। তিনি বিজেপির কেনও কর্মসূচিতেও যাননি, যাননি কোনও দলীয় বৈঠকেও। সম্প্রতি দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপির বৈঠকে শোভনকে তলব করা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, কিন্তু শেষপর্যন্ত সেখানেও অংশ নেননি তিনি। তিনি টানা এক বছর থেকে গিয়েছেন অন্তরালেই!
শোভনের ফেরা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা!
এবার মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ফিরতে পারেন তৃণমূলে। সেই জল্পনা ফের দানা বেঁধেছে। তৃণমূল রত্নাকে সরিয়ে শোভনের জন্য ফেরার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শোভনের ফেরার পথ প্রশস্ত হচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তা সত্যি হলে, শোভনের ফেরা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা!