পঞ্চায়েতে ৯৬ শতাংশ আসনে বিজেপির ‘রেকর্ড’ জয়ে হাসছে তৃণমূল! হাসছে গণতন্ত্র
৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ে আইনি জটাজালে বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভবিষ্যৎকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছিল বিজেপি। এবার ৯৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেল বিজেপি।
বাংলায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কারণে আইনি জটাজালে বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভবিষ্যৎকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছিল বিজেপি। এবার ৯৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেল বিজেপি, তারপরও বিস্ময়করভাবে নীরব গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী নেতারা। ত্রিপুরায় বিজেপির বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ে সরব হল রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে ৬৬ শতাংশ আসনের লড়াইয়ে বিপুল জয় পেয়েছিল তৃণমূল। বাকি ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিয়ে আইনি লড়াইয়েও তৃণমূলের জয় জয়কার হয়। সুপ্রিম কোর্টেও নির্দেশেও জয়ের স্বীকৃতি পান তৃণমূল প্রার্থীরা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০,১৫৯ আসনে বিজয়ীর স্বীকৃতি লাভ করেন তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীরা।
এবার ত্রিপুরায় ক্ষমতার পালাবদল হওয়ার পর লাল দুর্গে ফের আঘাত হেনে গেরুয়া ঝড় বইয়ে দিল বিজেপি। কিন্তু এই ঝড় তুলতে বাংলার রেকর্ডও ভেঙে দিল ত্রিপুরা বিজেপি। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের উপনির্বাচনে ৯৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেল গেরুয়া শিবির, যা গণতন্ত্রের লজ্জা বলে ব্যাখ্যা হতে পারে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ সেভাবেই ব্যাখ্যা করছে।
বাংলার তৃণমূল কংগ্রেস সরব হয়েছে, বাংলায় ৩৪ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি-সহ বিরোধীরা। তাতেই এমন ভান করেছিল বিরোধীরা যে, গণতন্ত্রের যায় যায় অবস্থা। তাহলে ৯৬ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার পর কী বলবেন বিজেপির নেতারা। এবার কীই-বা বলবেন সিপিএম নেতারা। তাঁরা কেন এখন নিশ্চুপ, প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত উপনির্বাচন হওয়ার কথা। গত মার্চে ত্রিপুরায় বিজেপি ও আইপিএফটি ক্ষমতায় আসার পরে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের সব স্তরে দল বদলের হিড়িক পড়ে যায়। দলে দলে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা দল ছাড়েন এবং পদত্যাগ করেন। ফলে মোট ৩ হাজার আসনে ভোট করার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কারণ গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ তিন জায়গা থেকেই পদত্যাগ করেন পদাধিকারীরা।
[আরও পড়ুন:দিলীপের মস্তানির জবাব গুন্ডামিতে দিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়, এবার শুধু বললেন পাগল]
বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি জোর খাটিয়ে সকলকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করিয়েছে। শাসন ক্ষমতা প্রয়োগ করে মনোনয়নপত্র জমা করতেও দেয়নি বিরোধীদের। যার ফলে বিজেপির সকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। উল্লেখ্য, ৩০ সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে ৩৩৮৬টি আসনের মধ্যে ৩২০৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১৬১টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ১৮টি জেলা পরিষদের আসন রয়েছে। তার মধ্যে সবমিলিয়ে ৩২৪৭টি আসন বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতিমধ্যে জিতে গিয়েছে। ফলে ৩০ সেপ্টেম্বর মাত্র ১৩২টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, সাতটি পঞ্চায়েত সমিতি আসনে ভোট হবে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জিকে রাও জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের মন্ত্রীর বাড়িতেই রয়েছে বোমার কারখানা! বিস্ফোরক অভিযোগ দিলীপের]
এই অবস্থায় বিজেপির সঙ্গী আইপিএফটি-ও সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলে নির্বাচন স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছে। বিরোধীরাও সরব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের অভিযোগ, প্রথমে জোর করে আমাদের প্রার্থীদের পদত্যাগ করানো হয়েছে। পরে ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন জমা করতে দেওয়া হয়নি। পাল্টা বিজেপির মুখপাত্র মৃণালকান্তি দেব বলেছেন, বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। মানুষ তাদের পরিত্যাগ করেছে। বিরোধীদের সংগঠন ভেঙে পড়েছে। তাঁর এই মন্তব্যের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বাংলার তৃণমূলের বক্তব্য।
[আরও পড়ুন: প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে 'দয়া'! পুজোর বাংলায় দুর্যোগের আশঙ্কা, সতর্কতা জারি]