বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেস-তৃণমূল-সিপিএম কি রামধনু জোটে, জল্পনা তুঙ্গে
তাই আবার কংগ্রেসের কাছাকাছি আসার প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জওহরলাল নেহরুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার দিল্লি যাচ্ছেন তিনি। উপলক্ষ এটা হলেও আসল লক্ষ্য, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-বিরোধী জোট নিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা করা। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলা না হলেও অন্তত এমনটা মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কংগ্রেস ছেড়ে ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন মমতা। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট হয়। সেই জোট ধরাশায়ী করেছিল সিপিএম তথা বামফ্রন্টকে। একই ফর্মুলায় ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে বাজিমাত করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ শরিক তৃণমূল কংগ্রেস ২০১২ সালে জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসে। অনুরূপভাবে পশ্চিমবঙ্গেও কংগ্রেস-তৃণমূল মধুচন্দ্রিমার অবসান ঘটে। ক্রমশ তিক্ত হয়ে ওঠে সম্পর্ক। কিন্তু এখন ঠেলার নাম বিজেপি! তাই আবার কংগ্রেস ও তৃণমূল কাছাকাছি আসার চেষ্টা শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ফের এই দুই দল জোট গড়বে।
মজার ব্যাপার হল, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস কার সঙ্গে জোট বাঁধবে, তা নিয়ে দলে দু'টি মত রয়েছে। আব্দুল মান্নান, অধীর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ কংগ্রেস নেতা সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপিকে ঠেকানোর পক্ষপাতী। আর একটি অংশ চায় তৃণমূলের হাত ধরতে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কংগ্রেসকে মাঝখানে রেখে দু'পাশে এসে ভিড়তে পারে যথাক্রমে তৃণমূল ও সিপিএম! অর্থাৎ তৃণমূল ও সিপিএম নিজেরা আলোচনা করে হয়তো জোট গড়ল না, কিন্তু দু'জনে কংগ্রেসের হাত ধরল। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ তথা গোটা দেশে সমীকরণটা দাঁড়াবে বিজেপি বনাম সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল। এমনটা যে হতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলেছে প্রকাশ কারাতের কথায়। তিনি জানিয়েছেন, জওহরলাল নেহরুর জন্মদিন উপলক্ষে ১৭ ও ১৮ নভেম্বর যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কংগ্রেস, তাতে তিনি অথবা তাঁর কোনও প্রতিনিধি হাজির থাকবেন। অর্থাৎ ২০০৮ সালে ইউপিএ সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার পর ফের সিপিএম আসতে চাইছে কংগ্রেসের কাছাকাছি।
২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে যদি সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূলের রামধনু জোট হয়, তা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিজেপিকে ঠেকানোই হবে এদের লক্ষ্য।
লক্ষণীয় বিষয়, জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদী কিংবা তাঁর দল বিজেপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ইঙ্গিত পরিষ্কার। অ-বিজেপি দলগুলিকে একই ছাতার তলায় নিয়ে এসে মহাজোট তৈরি করে লড়াই চালানো। বিজেপির উপস্থিতি সেই উদ্যোগ ভেস্তে দিতে পারে, তাই তাদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়নি।