শুধু বিজেপি নয় তৃণমূলের সুলতানও গোহারা, জয়ের দৌড়ে আকাশ ছুঁলেন সাজদা
উলুবেড়িয়ায় স্বামীর ছেড়ে যাওয়া আসনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেন তিনি। জয়ের ব্যবধানের নিরিখে সুলতান আহমেদকেও হারিয়ে দিলেন তাঁর যোগ্য সহধর্মিনী সাজদা আহমেদ।
প্রথমবার ভোট-যুদ্ধে নেমেই বাজিমাত করে দিলেন সুলতান-ঘরণী সাজদা আহমেদ। উলুবেড়িয়ায় স্বামীর ছেড়ে যাওয়া আসনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেন তিনি। জয়ের ব্যবধানের নিরিখে সুলতান আহমেদকেও হারিয়ে দিলেন তাঁর যোগ্য সহধর্মিনী সাজদা আহমেদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসের প্রতি অটুট আস্থা রেখে তিনি ভেঙে দিলেন সমস্ত রেকর্ড। উলুবেড়িয়া উপনির্বাচনে তাঁর জয়ের ব্যবধান দাঁড়াল ৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ২০১।
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী উলুবেড়িয়ায় প্রচারে এসে চ্যালেঞ্জ দিয়ে গিয়েছিলেন, এবার চার লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়ী হবেন তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর সেই কথাকে সত্য প্রতিপন্ন করে দেখালেন সাজদা। এক লাফে জয়ের ব্যবধান প্রায় আড়াইগুণ করে ফেললেন তিনি। প্রায় পৌনে পাঁচ লক্ষ ভোটে জিতলেন সাজদা। তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৭ লক্ষ ৬৭ হাজার ২১৯।
সুলতান আহমেদ ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে ২,০১,২২২ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিপিএমের সাবিরউদ্দিন মোল্লা। আর এবার সাজদার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীও পরিবর্তন হল। সিপিএমকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন বিজেপির অনুপম মল্লিক। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ০১৮। সিপিএম প্রার্থী সাবিরউদ্দিন পেয়েছেন মাত্র ১ লক্ষ ৩৮ হাজার, ৭৯২ ভোট। আর কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছে মাত্র ২৩ হাজার ১৬৮ ভোট। সেখানে নোটার প্রাপ্তী ১১,৭৬৮।
উলুবেড়িয়ায় সিপিএমের ২৯ বছরের হান্নান-রাজ বিলুপ্ত করে সুলতান আহমেদ প্রথম পরিবর্তনের ধ্বজা উড়িয়ে ছিলেন। ২০০৯-এ পরিবর্তনের সেই ভোটে ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ১৯৩ ভোট পেয়েছিলেন সুলতান আহমেদ। আর হান্নান মোল্লা পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ১৫ হাজার ২৫৭ ভোট। অর্থাৎ জয়ের ব্যবধান ছিল ৯৮ হাজার ৯৩৬।
আর ২০১৪-র লোকসভায় সুলতান আহমেদ সেই ব্যবধানকে নিয়ে গিয়েছিলেন দ্বিগুণেরও বেশিতে। সুলতান আহমেদ ২ লক্ষ ১ হাজার ২২২ ভোটে জয়ের পথে পেয়েছিলেন ৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৭৮৫ ভোট। আর সাবিরউদ্দিন মোল্লা পান ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫৬৩ ভোট। বিজেপির উত্থান হয়েছিল এই ভোটে। ২০০৯-এর তুলনায় প্রায় ৯৫ হাজার ভোট বাড়িয়ে ২০১৪-র নির্বাচনে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ১৩৭ ভোট পায় বিজেপি।
আর এবার উলুবেড়িয়ার লড়াই একপ্রকার ছিল বিজেপি না সিপিএম- কে দ্বিতীয় স্থান দখল করতে পারে। আর তৃমমূল প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান কত বাড়ে। ফলাফলে দেখা গিয়েছে, বিজেপি যেমন ভোট বাড়িয়ে সিপিএমকে টেক্কা দিয়েছে, তেমনই তৃণমূলও বিশাল ভোট বাড়িয়ে সাজদার জয়ের ব্যবধানকে সীমাহীন করে দিয়েছে। বিজেপি যেখানে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৮১ ভোট বাড়িয়েছে, তৃণমূল বাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪১৬ ভোট। অর্থাৎ সুলতান আহমেদের তুলনায় সাজদা আহমেদ এই সংখ্যক ভোট বেশি পেয়েছেন।