একুশের নির্বাচনে তৃণমূলকে 'সিওর সাকসেস' দিতে পারে মহাজোট! নেপথ্যে কোন অঙ্ক
একুশের নির্বাচনে তৃণমূলকে সিওর সাকসেস দিতে পারে মহাজোট! কোন অঙ্কে সম্ভব
বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বাম ও কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাম-কংগ্রেস উভয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপির উত্থানে তৃণমূল কংগ্রেস উদ্বেগে রয়েছে। সেই কারণেই বিজেপি বিরোধী সমস্ত দলকেই এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসকে মহাজোটে আহ্বান মমতার
মমতা বলেন, "বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস যদি সত্যিই বিজেপি বিরোধী হয়, তবে তাদের বিজেপির সাম্প্রদায়িক ও বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমাবেশ করা উচিত।" তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, "তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির আসল মুখ।"
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুসলিম জনগোষ্ঠীর অবস্থান বাংলায়
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৪২টির মধ্যে ১৮টি আসন জিতেছিল এবং ৪০ শতাংশ ভোটের রেকর্ড করেছিল। দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুসলিম জনগোষ্ঠীর অবস্থান এই বাংলায়। ফলে এবারের নির্বাচনে ভোট মেরুকরণের সম্ভাবনা প্রবল। এছাড়াও নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বা সিএএ এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধক বা এনআরসি ইস্যুও ফ্যাক্টর হবে নির্বাচনে।
মহাজোটই পারে বিজেপির বাধা টপকে তৃণমূলকে সাফল্য দিতে
বিরোধী ভোটের বিভাজন যেমন তৃণমূলকে সুবিধা করে দিতে পারে। তেমনই ভোট মেরুকরণের ফলে সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজন তৃণমূলকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে। সেই মেরুকরণের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতেই মহাজোটের বার্তা দিয়েছে তৃণমূল। বাম-কংগ্রসসহ ছোট দলগুলিকে নিয়ে যদি মহাজোট গড়া যেতে পারে, তবে বিরোধী ভোটের একাংশকে টেনে সহজেই বিজেপির বাধা টপকে যেতে পারে বিজেপি।
তৃণমূল ১০-১৫ শতাংশ বাড়তি ভোটের সুযোগ পাবে একুশে
২০১১ সালের আদমসুমারি অনুসারে মুসলমানরা জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ। সাম্প্রতিককালে তা ৩০ শতাংশ পেরিয়ে গিয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে ব্যবধান ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। বাম ও কংগ্রেসের ভোট একত্রিত হলে তৃণমূল ১০-১৫ শতাংশ বাড়তি ভোটের সুযোগ পাবে।
বাম-কংগ্রেস ও তৃণমূল যদি একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস ও তৃণমূল যদি একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত, তবে বিজেপি কেবল ৭টি আসন জিততে পারত। কিন্তু তিন দলের এক হওয়া কঠিন বাংলায়। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম কংগ্রেস ভেঙে হলেও, ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় সিপিএমের ৩৪ বছরের পুরনো শাসনের অবসান ঘটাতে কংগ্রেসের হাত ধরেছিল। তবে বাম ভোটের ক্ষেত্রে জোট সম্ভবনা ক্ষীণ। কারণ গত এক দশক ধরে সিপিএম এবং তৃণমূল প্রধান বিরোধী
মূলত মুসলিম ভোটকে মাথায় রেখেই মহাজোটের আহ্বান
মূলত মুসলিম ভোটকে মাথায় রেখে এই মহাজোটের আহ্বান জানানো হয়েছে। তৃণমূল ২০১৯ সালে মুসলিম সম্প্রদায়ের ৬৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস পেয়েছিল ২২ শতাংশ ভোট এবং বামফ্রন্ট পেয়েছিল ৫ শতাংশ ভোট। জোট হলে বাম-কংগ্রেসের ২৭ শতাংশ ভোটের সমর্থন অর্থাৎ মুসলিম ভোটের প্রায় 8 শতাংশ অর্জন করতে পারে।