তৃণমূল কংগ্রেস-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সন্দেশখালি, জখম ২৬, বনধের ডাক
ঘটনার শুরু সোমবার সন্ধেবেলা। নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সন্দেশখালিতে মিছিল বের করেছিলেন বিজেপি সমর্থকরা। আবির ছুড়ে, লাড্ডু বিলি করে উৎসব করছিলেন। সেই সময় দু'জন বিজেপি সমর্থককে শাসক দলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে বিজেপি সমর্থকরা পথ অবরোধ করেন। তখন গুলি-বোমা, লাঠি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা, এমনই অভিযোগ বিজেপি-র। মুহূর্তে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। ২১ জন বিজেপি সমর্থক এবং ৫ জন তৃণমূল সমর্থক গুরুতর জখম হন। এর মধ্যে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে এসএসকেএম হাসপাতালে। মঙ্গলবারও এলাকায় দু'দলের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
ইতিমধ্যে জখম দলীয় সমর্থকদের এসে দেখে গিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, "আমাদের সমর্থকরা নরেন্দ্র মোদীর শপথ উপলক্ষে একটু আনন্দ করছিল। অন্যায় তো কিছু করেনি। তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা পুলিশের সামনেই হামলা চালিয়েছে।" তিনি জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে অনুরোধ করা হয়েছে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পাল্টা দোষ চাপিয়েছেন বিজেপি-র ঘাড়ে। তিনি বলেন, "ওরা আমাদের কর্মীদের বাড়িতে চকোলেট বোমা ছুড়ে মারে। প্রতিবাদ করায় ভাঙচুর চালায়। বিজেপি-ই প্রথমে গণ্ডগোল পাকিয়েছে।"
লোকসভা ভোটপর্ব চলাকালীনই উত্তপ্ত হয়েছিল সন্দেশখালি। এখানে এক আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল হন স্থানীয় মানুষ। এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল বিজেপি। বসিরহাট লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য মেয়েটিকে দেখতে গিয়ে শাসক দলের হামলার মুখে পড়েন। তা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটে সন্দেশখালি বিধানসভা আসনে ৪০ হাজার ভোটে লিড নিয়েছে বিজেপি। এলাকায় বিজেপি-র শক্তি ক্রমশ বাড়তে থাকায় চিন্তা বেড়েছে শাসক দলের নেতাদের।
নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্ব ঘিরে উৎসব করায় আরামবাগের ডোঙ্গল এলাকায় অঞ্জন ঘোষ নামে এক বিজেপি সমর্থককে তৃণমূলের লোকজন মারধর করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়। তা ছাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিরাকোলে কয়েকজন বিজেপি সমর্থককে মারধর করা হয়েছে বলেও খবর মিলেছে। যদিও এর সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।