তৃণমূল প্রার্থীর বাংলাদেশি নাগরিক! শুভেন্দুর আক্রমণকে ভোঁতা করতে পাল্টা দেবাংশুর
তৃণমূলের টিকিটে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন আলোরানি সরকার। বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম থাকায়, তাঁর নির্বাচনী পিটিশন খারিজের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
তৃণমূলের টিকিটে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন আলোরানি সরকার। বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম থাকায়, তাঁর নির্বাচনী পিটিশন খারিজের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এই প্রেক্ষিতেই তৃণমূল কংগ্রেসকে একহাত নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আর সঙ্গে সঙ্গেই তার পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য।
জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপের নির্দেশ
তৃণমূল নেত্রী আলোরানি সরকার নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করলেও হাইকোর্ট তাঁকে বাংলাদেশি বলে তকমা দিয়েছে। আর বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম থাকার জন্য নির্বাচনী পিটিশন খারিজ হয়ে যায়। জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপের নির্দেশ দেয় আদালত। আর তা নিয়ে এবার শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বাংলাদশের ভোটার তালিকায়, ভারতীয় নাগরিক নয়!
হাইকোর্ট জানায়, আলোরানি সরকার নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করতে পারেন না। কেননা তাঁর বাংলাদশের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। আর ভারতে ডুয়েল নাগরিকত্বের কোনও আইন নেই। উল্লেখ্য, তিনি একুশের বিধানসভায় নির্বাচনে বনগাঁ দক্ষিণ থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি বিজেপির স্বপন মজুমদারের কাছে মাত্র ২ হাজারের সমান্য বেশি ভোটে হেরে যান। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
|
শুভেন্দু অধিকারীর নিশানায় আলোরানি ও তৃণমূল
এ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটে লেখেন, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯এ ধারা এর ৫ উপ ধারা অনুসারে রাজনৈতিক দলগুলির নিবন্ধীকরণের জন্য অন্যতম শর্ত হল ভারতীয় সংবিধানের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখা ও ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষা করা। একজন বিদেশি নাগরিককে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করানোর চক্রান্ত এই আইনি বিধি লঙ্ঘন করেছে। তাঁর নিশানা সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৯এ ধারা এর ৫ উপ ধারায় সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।
|
শুভেন্দুর টুইট নিশানায় আলোরানি সরকার
এখানেই থেমে থাকেননি শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আরও লেখেন, বাংলাদেশের ভোটার লিস্ট-এ আলোরানি সরকারের নাম রয়েছে, তাই আলোরানি সরকার নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করতে পারেন না। নাগরিকত্বের বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই রায়ে।
|
শুভেন্দুর টুইটে দ্বৈত নাগরিকত্বের খোঁচা
শুভেন্দুর লিখেছেন, আলোরানি বাংলাদেশের নাগরিক। ঠিক পড়েছেন। মহামান্য বিচারপতির পর্যবেক্ষণ হল আলোরানির নিজের দায়ের করা পিটিশনের তথ্য থেকেই এটা প্রমাণিত। মাননীয় বিচারপতি বিবেক চৌধুরী জানান, দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলে কোনও ব্যক্তি নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করতে পারেন না। এটা বেআইনি।
তৃণমূলকে খোঁচা শুভেন্দু অধিকারীর
শুভেন্দু শুধু আলোরানি সরকারকে নাগরিকত্বের খোঁচা দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি। তিনি বলেন, ওনাকে তৃণমূল কংগ্রেস দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নিয়োগ করে। এর পরেও বলবে দল জানত না? কোনও অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে এইরকম গুরু দায়িত্ব দেওয়া যায়? এই ধরনের দলের রেজিস্ট্রেেশন বাতিল করা কেন হবে না, জানতে চান শুভেন্দু।
|
দেবাংশুর পাল্টা শুভেন্দুকে
আর এই জায়গাতেই শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা দেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু পাল্টা টুইটে লেখেন, শুভেন্দু বাবু, এই আলোরানি সরকারকেই তো আপনার দল ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল। আপনাদের দলীয় প্রতীকে তিনি ১১ শতাংশ ভোটও দিয়েছিলেন! তখন তাঁর নাগরিকত্ব যাচাই করা হয়নি কেন? নাকি নিজের বেলায় আঁটিশুটি, পরের বেলায় দাঁতকপাটি?
তৃণমূল নেত্রী আলোরানি সরকারের দাবি
শুক্রবার হাইকোর্টে এই রায় দেওয়ার পর তৃণমূল নেত্রী আলোরানি সরকার বলেন, হাইকোর্টে মিথ্যা প্রমাণ দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টও ভুল রায় দিয়েছে। আমি ভারতীয় নাগরিক। আমার জন্ম ১৯৬৯ সালে। বাংলাদেশ ভাগের সময়ই আমরা সপরিবারে চলে আসি পশ্চিমবঙ্গে। হুগলিতে তাঁরা জায়গা কিনে বাড়ি করেন। এই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন বলে জানান আলোরানি।