একুশের কুরুক্ষেত্রে একই ‘ফর্মেশনে’ দল সাজাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, লড়াই জমজমাট
একুশের কুরুক্ষেত্রে একই ‘ফর্মেশনে’ দল সাজাচ্ছে তৃণমূল ও বিজেপি, লড়াই জমজমাট
২০২১-এর বিধানসভা সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি। ভোট ময়দানে নামার আগে এটা পরিষ্কার যে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি একই ফর্মেশনে দল সাজাচ্ছে। ফলে লড়াই এবার জমজমাট হবে, এটা আশা করাই যাচ্ছে। শেষপর্যন্ত কোন দল কাকে টেক্কা দেয়, টানটান উত্তেজনা থাকবে একুশের 'কুরুক্ষেত্র'-এ।
শুভেন্দুকে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি
একুশের ভোটের আগে তৃণমূলে অনেক নক্ষত্র পতন হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতা তৃণমূল ছেড়ে বিরোধী শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। বিজেপি তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে শুভেন্দু অধিকারীকে। আর শুভেন্দু অধিকারীকে দলে এনে একটা ভালো অঙ্কের ভোট-ব্যাঙ্ককে তারা নিজেদের দিকে টানতে সক্ষম হয়েছে।
বিমল গুরুং-ছত্রধর মাহাতোকে দিয়ে এলাকার রাশ নিচ্ছে তৃণমূল
একুশের আগে তৃণমূল এই ভাঙন সমস্যাকে গুরুত্ব না দিয়ে এলাকা ধরে ধরে সংগঠন বাড়ানোয় জোর দিয়েছেন। সেইমতো বিমল গুরুং, ছত্রধর মাহাতোকে কাজে লাগিয়ে এক-একটা অঞ্চলকে নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল। আবার ডুয়ার্স, জলপাইগুড়ি বা আলিপুরদুয়ারে আদিবাসী ভোট নিশ্চিত করতে আদিবাসী পবিকাশ পরিষদ ও সমাজকর্মীকে দলে এনে শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
অখণ্ড মেদিনীপুর শক্তিশালী হবে শুভেন্দুর আগমনে
বিজেপিও ঠিক তেমনইভাবে লড়াইয়ের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। যে সমস্ত এলাকায় বিজেপি দুর্বল সেই এলাকাগুলোয় বেছে বেছে তৃণমূল ভাঙাচ্ছে তারা। যেমন পূর্ব মেদিনীপুরকে শক্তিশালী করতে শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূল ভাঙিয়ে আনা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীকে এনে শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয়, অখণ্ড মেদিনীপুর এমনকী জঙ্গলমহলেও সুবিধা পাবে। আবার মালদহ-মুর্শিদাবাদেও বাড়তে সাহায্য করবে তৃণমূল।
উত্তর ২৪ পরগনায় মুকুল-অর্জুন-সব্যসাচী-শান্তনুরা
তেমনই উত্তর ২৪ পরগনায় মুকুল রায় থেকে শুরু করে অর্জুন সিং, সব্যসাচী দত্তদের নিয়ে দল বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বিজেপি। সেইসঙ্গে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক দখলে শান্তনু ঠাকুরকে নিয়েও বিজেপি অঙ্ক কষে এগোচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলাকে অনেকটাই হাতের মুঠোয় আনতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি।
শোভনকে কলকাতা-দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ করা
কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর কলকাতায় তেমন কাউকে ভাঙিয়ে আনতে পারেনি বিজেপি। কলকাতায় রাহুল সিনহা ছাড়া তেমন বড় কোনও নাম ছিল না। তাই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সক্রিয় করে কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভোট ময়দানে নামাতে চায় বিজেপি। শোভনকে দিয়ে তৃণমূলকে ভেঙে একুশের আগে ফায়দা তোলাই বিজেপির মূল লক্ষ্য। কারণ এখন এই জেলায় বিজেপি দুর্বল।
তৃণমূল মন্ত্রী-বিধায়করা বেসুরো বাজছেন হাওড়ায়
আর রয়েছে হাওড়া। হাওড়া জেলাতেও বিজেপি এখনও দাঁত ফোটাতে পারেনি। কিন্তু অমিত শাহের সফরের আগে যেভাবে তৃণমূল মন্ত্রী-বিধায়করা বেসুরো বাজছেন, তাতে বিজেপির পোয়াবারো। এখন দেখার হাওড়া তৃণমূলের এই বিক্ষুব্ধ নেতারা ভাঙন প্রশস্থ করে বিজেপির পথে পা বাড়ান কি না। শুভেন্দুর মতো লক্ষ্মীও মন্ত্রিসভা ছেড়েছেন, দল ছেড়েছেন। রাজীবকে নিয়ে জল্পনা চলছিলই। এখন আবার এই তালিকায় যোগ দিলেন বৈশালী ডালমিয়া ও রথীন চক্রবর্তীও। তাঁরা অন্য দলে যাওয়ার প্রসঙ্গও তুলেছেন তাঁদের ভাষ্যে।
শোভনকে দিয়ে তৃণমূল ভাঙার মাস্টারপ্ল্যান বিজেপির! মমতার 'মুক্তাঞ্চল’-এ এবার হানা