মমতার মুখ্যমন্ত্রী পদ বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা দলের, উপনির্বাচনের দাবিতে ফের কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল
মমতার মুখ্যমন্ত্রী পদ বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা দলের, উপনির্বাচনের দাবিতে ফের কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল
হাতে আর বেশি সময় নেই। উপনির্বাচন নিয়ে ফের তাড়া দিতে আজ নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। কারণ ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে না পাড়লে আর মুখ্যমন্ত্রী পদ থাকবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কারন বিপুল ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস জিতলেও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী জিততে পারেননি ভোটে। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হারতে হয়েছে তাঁকে। তাই এই সময়ের মধ্যে জিতে আসতে না পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রী পদ সংকটে পড়বে। সূত্রের খবর ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়াবেন তিনি।
ফের কমিশনে তৃণমূল কংগ্রেস
গতমাসের পর এমাসে ফের নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবারও সেই একই দাবি উপনির্বাচন ঘোষণা করতে হবে দ্রুত। গতবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাজ্যের ৭টি কেন্দ্রে উপনির্বাচন করানোর দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সুখেন্দুশেখর রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং ডেরেক ওব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক সন্তোষজনক হয়েছে বলে জানিেয়ছিলেন তাঁরা। এবং কমিশন নাকি তাঁদের জািনয়েছিলেন শীঘ্রই উপনির্বাচন ঘোষণা করা হবে। তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় একাধিক রাজ্যেই উপনির্বাচন করাতে হবে। সেই সব রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিরও তথ্য তলব করেছিল কমিশন। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ পাত্র কুনাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, এই সময় উপনির্বাচন করানোর সবচেয়ে উপযুক্ত সময় রয়েছে রাজ্যে। করোনা সংক্রমণ কমে গিয়েছে। প্রয়োজনে ৭দিন প্রচারের সময় দিয়ে ভোট করাতে পারে কমিশন।
মুখ্যমন্ত্রী পদ সংকটে
মে মাসে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বিধানসভা ভোটের। তারপর প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল। হাতে মাত্র আর তিন মাস সময় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কারণ নিয়ম অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী পদে যদি কোনও নির্বাচিত ব্যক্তি না বসেন তাহলে তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে হয়। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এবার সেই ৬ মাসের মধ্যে ভোটে জিতে আসতে হবে। কারণ তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলেও এবার ভোেট জিততে পারেননি। নন্দীগ্রামে শুভেন্দ্ু অধিকারীর কাছে হার স্বীকার করতে হয়েছিল তাঁকে। নিজে ভোটে হারলেও তাঁর দল বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়ে। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন মমতা। কিন্তু ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচিত হয়ে আসতে না পারলে সেই পদে আর তিনি থাকতে পারবেন না।
নন্দীগ্রামে হার মমতার
একুশের ভোটে হাইভোল্ডেজ কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম। সেই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যদিকে বিজেপির হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গোটা বাংলার ভোট একদিকে আর নন্দীগ্রামের দিকে নজর ছিল অন্যদিকে। ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচার চালিয়েছিলেন শুভেন্দু। এই নন্দীগ্রােমই মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রচারে গিয়ে আহত হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। তাঁর বাম পায়ে চোট লেগেছিল। সেই ভাঙা পায়েই প্রচার করে বেরিয়েছেন তিনি। হুইল চেয়ারে গোটা বাংলায় প্রচার জালিয়েছেন মমতা। কিন্তু নন্দীগ্রামে জিততে পারেননি তিনি। ভোটের দিন নন্দীগ্রামের একটি কেন্দ্রে কারচুপির অভিযোগে হাজির হয়েছিলেন তিনি। গননায় বিজেপি কারচুপি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন। প্রিসাইডিং অফিসারকে ভয় দেখিয়ে পুনর্গননা করা হয়েছে একাধিক ইভিএমের। এই নিয়ে কমিশনে পুনর্গননার দাবি জানিয়েছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু কমিশন তাতে রাজি হয়নি। শেষে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বলেিছলেন নন্দীগ্রামের ভোট নিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যাবেন।
ফের ভবানীপুরে মমতা
প্রশান্ত কিশোরের রণকৌশলে এই প্রথমবার নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েিছলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। কিন্তু নন্দীগ্রাম তাঁর মান রাখেনি। শুভেন্দুকে জিতিয়েছে। এবার ফের ভবানীপুরে প্রার্থী হতে চলেছেন তিনি। উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হবেন মমতা। তার প্রস্তুতি তিনি আগেই সেরে রেখেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় এবার ভবানীপুরে প্রার্থী হয়েছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগেই তিনি বিধায়ক পদ েথকে ইস্তফা দিয়েছেন। সেই কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হবেন। আর খড়দা থেকে প্রার্থী হবেন শোভনদেব। এই ছক সাজিয়ে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুই কেন্দ্রে ভোটের সব প্রস্তুতি সেরে রাখলেও কমিশন এখনও উপনির্বাচন ঘোষণা করছে না।