প্রাণ কাড়ছে বকখালির সমুদ্র, অতি আনন্দেই কি সলিল সমাধি ৩ পর্যটকের
প্রত্যেকবারই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কিছুদিন নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। তারপর যেই কে সেই। পর্যাপ্ত নুলিয়া নেই। পুলিশের ওয়াচ টাওয়ার ফাঁকা। নেই ভিড় সামলাবার ব্যবস্থাও।
ফের বকখালির সমুদ্র কাড়ল প্রাণ। সমুদ্রে স্নান করতে নেমে দুই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হল। মৃত্যু হল বাবা-মেয়ের। তাদের পারিবারিক এক বন্ধুরও মৃত্যু হয় এই দুর্ঘটনায়। শনিবার বিকেল থেকেই প্রবল উৎকণ্ঠার মধ্যে কেটেছে দুই পরিবারের। রবিবার সারা দেশ যখন রথযাত্রার আনন্দে মাতোয়ারা, তখন কলকাতার কসবা ও কৈখালির দুই পরিবার শোকের ছায়া।
সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে বকখালির হেনরিজ দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিলেন দুই বন্ধু পরিবার। কলকাতার দুই পরিবারের মোট ছ'জন বেড়াতে গিয়েছিলেন। শনিবার বিকেলে তাঁরা সকলেই নেমেছিলেন সমুদ্রে। সেইসময় প্রবল ঢেউয়ের মুখে তলিয়ে যান কসবার সোমরাজ গুপ্ত (৩৭), তাঁর সাত বছরের মেয়ে সোমরিনা (৭) ও তাঁদের পারিবারিক বন্ধুর স্ত্রী হৃষিতা প্রামাণিক (৩২)। অন্যরা বাঁচাতে ছুটে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি, তলিয়ে যান তিনজনেই। তাঁদের সলিল সমাধি হয় বকখালির সমু্দ্রে।
শনিবার
রাতেই
হৃষিতার
দেহ
উদ্ধার
করে
পুলিশ।
ঘটনাস্থল
থেকে
২৫
কিলোমিটার
দূরে
উদ্ধার
হয়
তাঁর
দেহ।
কিন্তু
রাতভর
তল্লাশি
চালিয়েও
সোমরাজবাবু
ও
তাঁর
মেয়ে
সম্প্রীতির
দেহ
উদ্ধার
করা
যায়নি
শনিবার।
রবিবার
সকালে
ফ্রেজারগঞ্জ
উপকূল
থানার
পুলিশ
ও
নৌবাহিনীর
সদস্যরা
দু'জনের
দেহ
উদ্ধার
করে।
প্রায়ই
সমু্দ্রে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যুর খবর শোনা যায় বকখালিতে। তবু পর্যটকদের সচেতনতার লেশমাত্র নেই। সেই থোড়াই কেয়ার মনোভাবের জেরেই বকখালির সমুদ্র কেড়ে নিল তিন-তিনটি প্রাণ। বিশেজ্ঞদের মতে, ওই জায়গায় সমুদ্র উত্তাল। সবসময় আন্ডার কারেন্ট থাকে। তা সত্ত্বেও কোনও নিরাপত্তার বালাই নেই। প্রত্যেকবারই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কিছুদিন নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। তারপর যেই কে সেই। পর্যাপ্ত নুলিয়া নেই। পুলিশের ওয়াচ টাওয়ার ফাঁকা। নেই ভিড় সামলাবার ব্যবস্থাও। মাইকিংও হয় না নিয়মিত।
সোমরাজের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই পরিবারেরই পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তারপর পাহাড়ে অশান্তির কারণে পরিকল্পনায় বদল আনেন। বেড়াতে যান বকখালিতে। সেখানে গিয়েই ঘটে গেল ভয়ঙ্কর বিপদ। অতি আনন্দে মাততে গিয়েই সমুদ্রে সলিল সমাধি ঘটে গেল। চলে গেল তিন-তিনটি তরতাজা প্রাণ।