রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রের আওতায় এল বসিরহাটের তিন জায়গা
আজ রাজা নেই, নেই রাজ্যপাটও। এক সময়ের জমিদারি শাসনে থাকা বাড়ি এখন সরকারি নিয়ন্ত্রণে। ইতালিয়ান স্থাপত্যের মধ্যে আজও অন্যতম প্রাচীন ইতিহাস বহন করে চলেছে উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্তবর্তী শহর বসিরহাটের ধান্যকুড়িয়ার জমিদার বাড়ি। আজও রাজা না থাকলেও ধান্যকুড়িয়ায় গেলে দেখা যাবে রাজ্যপাটের নিদর্শন।

সেই ঐতিহ্যের নিরিখেই রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রের মুকুট জুড়ল এই তিন নয়া পালক। একদিকে বসিরহাট মহকুমার দু - নম্বর ব্লকের ধান্যকুড়িয়ায় শতাব্দী প্রাচীন জমিদারি নিদর্শন, আছে প্রাচীন গ্রামে তেরোশো বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত মহাকুমার একমাত্র চতুষ্পাঠী বা টোল বা পাঠশালা। অন্যদিকে ব্রহ্মচারী সাধক লোকনাথ দেবের জন্ম স্থান চাকলা ধামের পাশাপাশি এবার ট্রিকালব সাধক বাবা লোকনাথের কচুয়াধাম কেও রাজ্য সরকার তার পর্যটন দফতরের অধীনে অন্তর্ভুক্তি করলো। ইতিমধ্যে রাজ্যের পর্যটন দফতরের উদ্যোগে কচুয়া ধাম এর কাজ শুরু হয়ে গেছে।

বসিরহাটের প্রাচীন জায়গা গুলোর মধ্যে ধান্যকুড়িয়া প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে আসছে। অন্যদিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ধান্যকুড়িয়া সাধারন পাঠাগার 81 বছরের উপর স্থাপত্য করছে বলে জানান সমাজকর্মী ছন্দক বাইন । তিনি আরও বলেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ইংরেজ আমলে এই গ্রামে এসে দেশ স্বাধীন করার বীজ বপন করেছিলেন। প্রথম রাজ্যপাল হরেন মুখার্জি এই গ্রামের ছোঁয়া রেখেছিলেন। এছাড়াও ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় এই গ্রামে এসে প্রশংসা করেছিলেন গ্রামের শিক্ষার অগ্রগতি দেখে।'

প্রায় ২০০ বছর ধরে এই গ্রামের বাসিন্দাদের আন্তর্জাতিক পাটের ব্যবসা। এখনো অটুট রয়েছে বিদ্যাধরীর শাখা নদীর তীরে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখিদের কিচিরমিচির। শীতকালে বিদ্যাধরীর তীরের জঙ্গলে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা দেখা যায় এই গ্রামে। পর্যটকরা এই গ্রামে সারা বছর ধরে আসেন বিভিন্ন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ক্যামেরাবন্দি করতে।
ধান্যকুড়িয়া সাধারণ পাঠাগার সম্পাদক চঞ্চল মন্ডল জানান, ' নকশী কাঁথা, বরি, গামছা, মাদুর এবং এই গ্রামে বিশেষ উপকরণ মিষ্টান্ন আজও ইতিহাস বহন করে চলেছে। সেকারণেই এই প্রাচীন ইতিহাস ও ভাস্কর্য ও শিক্ষা অগ্রগতি এই গ্রামকে দেখে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ধান্যকুড়িয়া কে সার্কিট ট্যুরিজম অন্তর্ভুক্তি করেছেন।