দিনাজপুরে টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে নিজেদের বিয়েই আটকে দিল তিন কন্যাশ্রী
টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে নিজেদের বিয়ে নিজেরাই আটকে দিল তিন কন্যাশ্রী ছাত্রী।
টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে নিজেদের বিয়ে নিজেরাই আটকে দিল তিন কন্যাশ্রী ছাত্রী। নিজেদের বিয়ে বন্ধ করে তারা রীতিমতো স্কুলেও গেল। তারা এখনও পড়াশুনা করতে চায়, বাল্য বিবাহে তারা রাজি নয় বলে জানিয়েছে। তিন কন্যার বীরত্বে মুগ্ধ এলাকাবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বোচাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে। নাবালিকা নবম শ্রেনীর তিন ছাত্রীর কাছ থেকে টোলফ্রি নম্বরে অভিযোগ পেয়ে ওই তিন নাবালিকার বাড়িতে ছুটে যান জেলার চাইল্ড লাইন, কালিয়াগঞ্জ ব্লক প্রশাসন ও কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। তাদের পরিবারের সাথে কথা বলে বাল্য বিবাহের সম্পর্কে অবহিত করেন।
পাশাপাশি ছাত্রীদের পড়াশুনার জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কথাও জানান। এরপরই ওই ছাত্রীদের পরিবার থেকে বিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সেই তিন বীরাঙ্গনা নাবালিকা কন্যাশ্রী ছাত্রীকে তাদের এই সাহসী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি'র উদ্যোগে সম্বর্ধনা দেওয়া হয় সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা চাইল্ড লাইনের সদস্য বিপুল দাস ও প্রসেনজিৎ দে এবং উপস্থিত ছিলেন তিনি নাবালিকার অভিভাবকেরা।
মাস খানেক ধরে জেলার বিভিন্ন গার্লস স্কুলে গিয়ে ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা, বাল্য বিবাদ রোধ এবং নিজেদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে তা নিয়ে সচেতনতা শিবির শুরু করেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। পুলিশের এই উদ্যোগ যে আজ কতটা সফল পেলো প্রমান মিলেছে কালিয়াগঞ্জের বোচাডাঙায়, প্রতিরোধে এগিয়ে আসা তারা নিজেরাই সরকারি টোলফ্রি নম্বরে ফোন করে নিজেদের বিয়ে আটকে দিয়েছে।
শুধু তাই নয় নতুন উদ্যমে উচ্চশিক্ষার জন্য বিয়ে বন্ধ করে স্কুলেও যাচ্ছে এখনই বিয়ে নয় শিক্ষা চাই এই স্লোগানকে হাতিয়ার করে তারা অসম সাহসিকতা দেখিয়ে পরিবারের বাবা মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজেদের বিয়ে নিজেরাই আটকে দেওয়ার প্রয়াস নিয়েছেন। জেলা চাইল্ড লাইন ও ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ সর্বতোভাবে এগিয়ে এসেছে। তিন কন্যাশ্রীর প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে রাজ্য সরকারের শিক্ষা প্রকল্প সহ নানান সামাজিক সুবিধাগুলি তুলে ধরেন।
সম্প্রতি চোপড়ার সুষমার মতো পড়াশুনার প্রতি অদম্য আগ্রহ আর সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠাকে অবলম্বন করে কালিয়াগঞ্জের এই তিন কন্যাশ্রী ছাত্রীও এক অনন্য নজির গড়লেন এটা বলাই যায়।