শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক ‘বিদ্রোহী’ রাজীবের! সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে
শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক ‘বিদ্রোহী’ রাজীবের! সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারে জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেদিনীপুরে সভা নিয়ে যখন সমস্ত তৃণমূল নেতৃত্ব ব্যস্ত, তখনই নাকি গোপন বৈঠকে বসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের দুই ভবিষ্যৎ তরুণ-তুর্কি নেতা এখন বিদ্রোহীর ভূমিকায়। শুভেন্দুর পর রাজীবও মুখ খুলেছেন তৃণমূলের কংগ্রেসের অন্দরে। তারপরই দুই নেতার বৈঠক নিয়ে রটনা তৈরি হয়েছে।
কলকাতায় যাওয়ার পথে রাজীবের সঙ্গে কথা শুভেন্দুর! জল্পনা
খবরে প্রকাশ, মেদিনীপুরে মমতার সভা চলাকালীন শুভেন্দু অধিকারী গাড়ি ছুটিয়ে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। কাঁথির শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরিয়ে কোলাঘাট হয়ে তিনি কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তারপর কলকাতায় নিজের ফ্ল্যাটে গাড়ি থেকে না নেমে শহর পরিদর্শন করেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় উঠে আসে সেই তথ্য।
শুভেন্দু-রাজীব বৈঠক! রটনা হোক, জল্পনা হোক চর্চা তুঙ্গে
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া ও কিছু পোর্টালে খবর রটে যায়, শুভেন্দু অধিকারী কলকাতায় আসার আগে কোলাঘাটে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকের সত্যতা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। যদি এই বৈঠক নিছক রটনাও হয়, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলছে বিস্তর।
শুভেন্দুর মতোই পোস্টার রাজনীতি রাজীবকে নিয়েও
কেননা শুভেন্দু অধিকারীর মতো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলের একজন ভবিষ্যৎ। শুভেন্দুর মতোই তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তারপর তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার রাজনীতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও তাঁর বিধানসভা ক্ষেত্র ডোমজুড় এবং বাঁকুড়া-বীরভূমেও রাজীবের নামে পোস্টার পড়েছে। সেখানে তাঁকে তৃণমূলের পরিচয়ে বিভূষিত করা হয়নি।
করিৎকর্মা নেতা হয়েও শুভেন্দু-রাজীব মর্যাদা পাননি দলের অন্দরে
এমনই নানা কারণে শুভেন্দুর সঙ্গে পথ মিলে গিয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্রোহী হওয়ার পর শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর এই বৈঠক নিয়ে রটনা হওয়াও স্বাভাবিক। দুই নেতা মিলিত হতেই পারেন। উভয়েই তৃণমূলে স্তাবকতার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন। উভয়ই করিৎকর্মা নেতা। যখন যে কাজ নেত্রী দিয়েছেন, তা করে দেখিয়েছেন। কিন্তু সেই মর্যাদা তাঁরা দলের অন্দরে পাননি।
একুশের আগে শুভেন্দুর পর রাজীব বিদ্রোহী স্তাবকতার প্রশ্নে
২০২১-এর নির্বাচনের আগে শুভেন্দুর পর রাজীবের বিদ্রোহী হয়ে ওঠা তৃণমূলের কাছে শুধু অশনি সংকেতই না তা বুমেরাং হবে। বিদ্রোহের আগুনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন দলের স্তাবকতা নিয়ে। প্রকাশ্যে বেসুরো গেয়ে রাজীব বলেন, এখন স্তাবকতার যুগ। হ্যাঁ-কে হ্যাঁ, আর নাকে না বলে মেলাতে পারলেই তুমি বেশি নম্বর পাবে। আমি পারিনি তাই আমি পিছনের সারিতে।
বিজেপির উত্থানে তৃণমূলে যখন আতঙ্ক, বুক চিতিয়ে লড়াই
২০১৯-এ তৃণমূল কংগ্রেস ৪২-এ ৪২-এর লক্ষ্য নিয়ে ভোট ময়দানে নেমেছিল। কিন্তু ৪২-এর টার্গেটে নেমে মাত্র ২২-এই থেমে যেতে হয়েছিল তাদের। বিজেপি ২ থেকে বেড়ে হয়েছিল ১৮। বিজেপির এই উত্থানের পর তৃণমূল যখন ভাঙন আতঙ্কে তটস্থ, তখনই বুক চিতিয়ে লড়ে তৃণমূলকে ফের জয়ের দিশা দিয়েছিলেন শুভেন্দু-রাজীবরা।
গুরুদায়িত্ব সামলেছেন ২০১৯-এ, এখন বিদ্রোহী শুভেন্দু-রাজীব
লোকসভা নির্বাচনের পরে তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁধে গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের তৃণমূলকে খাদের কিনারা থেকে তাঁরা টেনে তুলেছিলেন অদম্য লড়াইয়ে ভর করে। যে দুই কেন্দ্রে কোনওদিন জেতেনি তৃণমূল, সেই দুই কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন তাঁরা।