ক্লাসে উভয়ের সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতাই মাধ্যমিকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে সত্যম-সৌম্যজিৎকে
কে কাকে টেক্কা দিতে পারে, কে প্রথম হতে পারে ক্লাসে— সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়াই আশাতীত সাফল্যের মূলে।
তফাৎ শুধু তিন নম্বরের। দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর মধ্যে প্রথম থেকেই ঠান্ডা লড়াই ছিল। ক্লাসে কে কাকে টেক্কা দিতে পারে? কে প্রথম হতে পারে? সেই সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতাই সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছে তাদের। একজন সত্যম কর। অন্যজন সৌম্যজিৎ বসাক। প্রথম জন কলকাতার মধ্যে দ্বিতীয় হয়ে মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। আর তৃতীয় সৌম্যজিৎ বসাক মেধা তালিকায় নবম স্থান লাভ করেছে।
তাদের এই সাফল্যের চাবিকাঠি কী? এই প্রশ্নর উত্তরে দু'জনেই সহমত। সত্যম ও সৌম্যদীপ জানায়, পাঠ্যবইয়ের উপরই তারা বেশি জোর দিয়েছে। সেইসঙ্গে সহায়িকাও পড়েছে তারা। দু'জনেরই মত, পাঠ্যবইয়ে জোর দিতে হবে। খুঁটিয়ে পড়তে হবে। সত্যম জানিয়েছে, ভালো ফলের প্রত্যাশা ছিলই। তবে এতটা ভালো ফল হবে আশা করিনি। লিখে অভ্যাস করেছি। যা পড়েছি, তা সঙ্গে সঙ্গে লিখেছি। ভালো ফল হয়েছে, ভালো লাগছে। ভালো লাগছে সৌম্যজিতের জন্যও।
সত্যম জানায়, সাত থেকে আটঘণ্টা প্রতিদিন পড়তাম। তবে একটানা পড়তে পারতাম না। মাঝেমধ্যে গান শুনতাম। স্কলের শিক্ষকদের সাহায্য ও প্রধান শিক্ষকের অনুপ্রেরণার কথাও জানাতে ভোলেনি সত্যম। গল্পের বই আর ক্রিকেট খেলা দেখা তার নেশা। ভালোবাসে গোয়েন্দা গল্প পড়তে। শার্লক হোমশ পড়তে বেশি পছন্দ করে সে।
সৌম্যজিৎও বন্ধুর সাফল্যে খুব খুশি। সেও জানাল তাঁর সাফল্যের পিছনে মূল চাবিকাঠি পাঠ্যবইয়ে জোর দেওয়া। স্কুলের শিক্ষকদের অবদানের কথা তার মুখেও। সৌম্যজিতও ৭-৮ ঘণ্টা পড়ত দিনে। সেইসঙ্গে আঁকতে ভালোবাসে সে। আর ফুটবল পাগল সৌম্যজিত মেসির ভক্ত।
দু'জনেই প্রশাসনিক কোন পদে আসতে চায় না, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়াই তাদের লক্ষ্য। তাদের কথায়, নিজের মন থেকে যেটা হওয়ার বাসনা তৈরি হয়, প্রত্যেকের সেটা হতে চাওয়াই উচিত। যার যে বিষয় ভালো লাগে, সেটা হলেই সেই ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সাফল্য পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস সত্যমের। আর সৌম্যজিৎ মনে করে, ভালোবেসে যদি কাজটা না করি, তাহলে কাজটা হবে ঠিকই, হবিটাও পূর্ণ হবে না।