একজন অনড় গোর্খাল্যান্ডে, অন্যজন চান আলোচনা, পাহাড়ে বিভাজন মোর্চার মধ্যেই
পাহাড় ইস্যুতে আড়াআড়ি দু-ভাগ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ভাগ হলেও অডিও-বার্তা তুচ্ছ করে ২৯ আগস্টের সর্বদল বৈঠকে যোগ দিচ্ছে মোর্চা।
একজন অনড় গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে, অন্যজন চাইছেন শান্তি-আলোচনা। পাহাড় ইস্যুতে আড়াআড়ি দু-ভাগ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড় আন্দোলনে মোর্চার বিষদাঁত প্রায় ভেঙে পড়ায়, একটা সুস্থির অবস্থানে আসতে শুরু করেছে দার্জিলিং-সহ পাহাড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। একটা আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি হতে চলেছে। এই অবস্থায় পাহাড়ে মোর্চার মধ্যে তীব্র মতভেদ প্রকাশ্যে এল।
মোর্চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাংয়ের নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি টিম নবান্নে আসছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সর্বদল বৈঠকে যোগ দিতে। মোর্চার কাছ থেকে বার্তা পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীও এখন অনেক নমনীয়। তবে যাঁরা পাহাড়ে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছে তাঁদের কোনওমতেই রেয়াত করা হবে না বলে প্রশাসনকে বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এই অবস্থায় মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংয়ের ব্যাপারে কড়া অবস্থানই নিয়েছে মমতার প্রশাসন। তাই জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। তাঁর অবর্তমানে পাহাড়ে মোর্চার মুখ হয়ে উঠেছেন বিনয় তামাং। গুরুং লোকচক্ষুর অগোচরে চলে যাওয়ায় পরই পাহাড়ে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে হুবহু গুরুংয়ের কণ্ঠে অডিও ক্লিপিং মোর্চার মধ্যে বিভাজনের আবহ তৈরি করেছে। গুরুংয়ের কণ্ঠে অডিও ক্লিপিংয়ে মোর্চা নেতাদের প্রচ্ছন্ন হুমকিই দেওয়া হয়। পাশাপাশি বলা হয়, গোর্খাল্যান্ড দাবি থেকে এক চুল সরলেও সেটা মঙ্গলজনক হবে না ওইসব মোর্চা নেতাদের পক্ষে। মঙ্গলজনক হবে না পাহাড়ের ক্ষেত্রেও।
সোমবার ঠিক তার উল্টো কথা শোনা যায় বিনয় তামাংয়ের মুখে। তিনি বলেন, পাহাড়ের জন্য এই মুহূর্তে আলোচনাই সর্বশ্রেষ্ঠ পথ। আর সেই পথে হেঁটেই মোর্চা নবান্নে যাবে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নিতে। তিনিও চান, অনতিবিলম্বে পাহাড়ে শান্তি ফিরুক। তারপর অন্য প্রসঙ্গ। গোর্খাল্যান্ডের দাবি তো তাঁরা উত্থাপন করবেনই, কিন্তু পাহাড়ের শান্তিই সর্বাগ্রে বিবেচ্য হবে।
উল্লেখ্য, পাহাড়ে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে এখন রাজ্য প্রশাসনের স্ক্যানারে বিমল গুরুং। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও একটি খুনের মামলা ঝুলছে। বাধ্য হয়ে তাঁকে গা ঢাকা দিতে হয়েছে। অডিও ক্লিপিংয়ে অভিযোগ, তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। মোর্চার একশ্রেণির নেতাও মুখ হয়ে উঠতে চাইছে এই সুযোগে।
এই কথায় স্পষ্ট অডিও-বার্তায় অভিযোগের তির বিনয় তামাংয়ের দিকেই। ফলে পাহাড়ে এখন মোর্চার দ্বিখণ্ডিত হওয়ার আবহ। সুযোগ কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর জিএনএলএফ, জন আন্দোলন পার্টি-সহ পাহাড়ের অন্য দলগুলিও।