ফের বিভ্রাট কলকাতা মেট্রো রেলে, ঘন্টা খানেক নন এসি রেকে আটকে থেকে অসুস্থ বহু যাত্রী
এদিন সকাল সকালে ঘটনার সূত্রপাত। কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন থেকে দমদমগামী একটি নন এসি রেক পার্ক স্ট্রিট স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে সুড়ঙ্গে ঢোকার পর বিকল হয়ে যায়। এবং অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যেই দাঁড়িয়ে পড়ে নন এসি রেকটি। কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না যাত্রীরা। মেট্রোর ভিতরে হই চই পড়ে যায়। ঘটনার জেরে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। প্রায় ঘন্টা খানেক এভাবে মেট্রোর মধ্যে আটকা থাকার পর নন এসি রেকটির দরজা খুলে দেওয়া হয়।
মেট্রো রেলের মুখপাত্র আর এন মহাপাত্র জানিয়েছেন, সকাল ১১.২৫ মিনিটে ঘটনাটি ঘটে। পার্ক স্ট্রিট ছেড়ে সুরঙ্গে ঢোকার পরই সমস্যা হয়। তিনি জানিয়েছেন সমস্ত যাত্রীদের নন এসি রোকটির উভয় দিক দিয়ে মইয়ের সাহায্যে নামিয়ে আনা হয়।
এই ঘটনায় স্বাভাবিক মেট্রো চলাচল ব্যহত হয়। একদিকে যেমন দমদম থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত মেট্রো চালানো হয়। তেমনই অন্যদিকে মহানায়ক উত্তমকুমার (টালিগঞ্জ) থেকে কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া) স্টেশন অবধি চালানো হয়। দুপুরের পর মেট্রো পরিষেবা ফের স্বাভাবিক হয়।
সূত্রের খবর অনুয়ায়ী, সুড়ঙ্গে অন্ধকারের মধ্যে দিয়েউ প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা হাটিয়ে নিয়ে এসে বের করা হয় যাত্রীদের। এই ঘটনার জেরে মহিলা ও শিশুদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়ে। অনেকেই জ্ঞান হারান। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবাইকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে প্রায় ১কিলোমিটার হাঁটিয়ে বের করে আনা হয়েছে যাত্রীদের
যদিও মেট্রো রেলের মুখপাত্র আর এন মহাপাত্র এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নন এসি রেকটি বন্ধ হয়ে গেলেও সবাইকে নিরাপদভাবেই বের করে আনা হয়েছে। আমাদের কাছে কারও অসুস্থ হওয়ার কোনও খবর আসেনি, অসুস্থ যাত্রী নিয়ে খবর বলা হচ্ছে তা নিতান্তই গুজব। কোনও যাত্রীরই কোনও সমস্যা হয়নি।
এদিকে এই ঘটনায় মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপরই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীদের একাংশ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই বারবার বিভ্রাটের মুখে পড়তে হয় মেট্রোকে। যাত্রীদের কথায়, সুড়ঙ্গের মধ্যে মেট্রো আটকে পড়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যে আলো-পাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়। রেক থেকে একটি বিভৎস আওয়াজ আসছিল। তার উপরে সরকারি কোনও ঘোষণা না হওয়ায় আরও আতঙ্ক বাড়তে থাকে। ৪৫ মিনিট বাদে প্রথম জানানো হয় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ মেট্রো। অথচ পাশ দিয়ে অন্য রুটের মেট্রো অনবরত চলছে। এত ভিড় ছিল যে সামনের দিকে পৌছতেই অধিকাংশের ঘন্টা দেড়েকের উপর লেগে যায়। ওই নন এসি রেকে অনেক বয়স্ক যাত্রীও ছিলেন। তাঁদের জন্য অন্য কোনও ব্য়বস্থা রাখা হয়নি। হাজার অসুবিধা সত্ত্বেও জোর করে মই দিয়েই তাঁদেরও নামানো হচ্ছিল।
উল্লেখ্য এই প্রথমবার মেট্রো বিভ্রাটের সাক্ষী রইল কলকাতাবাসী তা একেবারেই নয়। এর আগেও বহুবার মেট্রো রেলে বিভ্রাট দেখা গিয়েছে। তবে যাত্রীদের কথায় এবারের ঘটনাটি নন এসি রেকে হওয়ার দরুণ কিছুটা বাঁচোয়া। এসি রেকে এই দুর্ঘটনা ঘটলে পরিস্থিত আরও ভয়াহব হতে পারত।