টিম পিকে-র গ্রাউন্ড রিপোর্ট, উত্তরবঙ্গে হারানো জমি পুনরুদ্ধার তৃণমূল কংগ্রেসের
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস খুব একটা ভালো ফলাফল করতে পারেনি। পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৃণমূল ৩৪ টি আসন পেয়ে জয়ী হয়েছিল।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস খুব একটা ভালো ফলাফল করতে পারেনি। পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৃণমূল ৩৪ টি আসন পেয়ে জয়ী হয়েছিল। সেখানে ২০১৯ এর নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূল পেয়েছে মাত্র ২২ টি আসন। এবং ১৮ টি আসন পেয়ে রাজ্যে দ্বিতীয় শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। যাদের ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র দুটি আসন ছিল। আর এই বিজেপির এই উত্থান রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রকে অনেকটাই বদলে দিয়েছে। তৃণমূলের শক্তি ক্ষয় হয়েছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ সতর্ক করেছেন। অন্যদিকে বিজেপি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে
কাজ শুরু টিম পিকে-র
এই লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর তা সামাল দিতে এবং আগামী নির্বাচনে ভালো ফলাফল করতে তৃণমূল কংগ্রেস সাহায্য নিয়েছে নির্বাচনী রণকৌশলী প্রশান্ত কিশোরের। তাঁর সংস্থা আইপ্যাড এখন রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা।
নির্দিষ্ট সমীক্ষা
এবার রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম রিপোর্ট তৃণমূল কংগ্রেসকে দিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। এবং সেখানে যে বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে তা একটি নির্দিষ্ট সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে ধস
লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে চারটিতে পর্যুদস্ত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই সবকটি আসন বিজেপি ছিনিয়ে নিয়েছে। একটিমাত্র আসন পেয়েছে কংগ্রেস। অর্থাৎ গোটা উত্তরবঙ্গ থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তৃণমূলকে। এটা অবশ্যই একটা বড় ধাক্কা। আর সেই ধাক্কার জেরেই ফলাফলে তৃণমূল পিছিয়ে পড়েছে।
টিম পিকে-র গ্রাউন্ডওয়ার্ক
বেশ কয়েক মাস নেপথ্যে থেকে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে এবং এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাজ করেছে টিম প্রশান্ত কিশোর। তারপর যে নতুন রিপোর্ট সামনে এসেছে তা অবশ্যই মনোবল বৃদ্ধি করবে তৃণমূল কংগ্রেসের। কারণ সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে আগের থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
উত্তরবঙ্গে ফোকাস মমতার
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার উত্তরবঙ্গ ছুটে গিয়েছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যতবার উত্তরবঙ্গ সফর করেছেন সেরম দৃষ্টান্ত অতীতে খুব একটা নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেভাবে বিজেপি উত্তরবঙ্গে ডালপালা মেলেছে তা অবশ্যই চিন্তার কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। কেন এমন হল তার তত্ত্বতালাশ করতেই প্রশান্ত কিশোরের ওপর ভার দেওয়া হয়েছিল।
ফল পেতে শুরু করেছে তৃণমূল
প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা একেবারে নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে কাজ করে এবং এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে। যে রিপোর্টের ভিত্তিতে উত্তরবঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংগঠনিক স্তরে রদবদল করে এবং এর ফলে মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই তৃণমূল ফল পেতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, শীতলকুচি সহ বিভিন্ন অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে কিছুটা পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
জনসংযোগে তৃণমূল
এবার সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে এবং সঙ্গে পিকে-র টোটকাকে হাতিয়ার করে জনসংযোগে নামছে তৃণমূল। একইসঙ্গে যে বিষয়গুলি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তার ভিত্তিতেই হারানো জমি পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হবে তৃণমূল। যে কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।