সেনাদের নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট করে চাকরি গেল শিক্ষকের! অপেক্ষা বদনাম ঘোচানোর
পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার পর সেনা-জওয়ানদের নিয়ে ফেসবুকে মত জাহির করেছিলেন কলকাতার বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষক।
পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার পর সেনা-জওয়ানদের নিয়ে ফেসবুকে মত জাহির করেছিলেন কলকাতার বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষক। ওই পোস্ট নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তা মুছেও দিয়েছিলেন। তবু শেষ রক্ষা হল না। শুধু বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুরই নয়, স্কুলের চাকরি পর্যন্ত ছাড়তে বাধ্য হলেন শিক্ষক চিত্রদীপ সোম।
তিনি অভিযোগ করেন, পোস্ট নিয়ে তাঁর যুক্তি পুরোপুরি না পড়েই এমন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল। কিন্তু তিনি কী পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে, যা নিয়ে তাঁর চাকরি পর্যন্ত চলে গেল? উত্তর কলকাতার এক নামী স্কুলের শিক্ষক বনগাঁর বাসিন্দা চিত্রদীপ সোম নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছিলেন, তিনি সেনা জওয়ানদের শহিদ বলার পক্ষপাতী নন।
এই বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি নিজের মতামত জানিয়েছিলেন। তারপরই তাঁর করা ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। অনেকে পোস্টের বিরোধিতায় নানা মন্তব্য করেন। এরপর তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুরও চালান এক দল যুবক। তাঁকে মারধর করে জোর করে ক্ষমা চাওয়ানোও হয় বলে অভিযোগ।
এরপরই বনগাঁ থানায় বিস্তারিত জানিয়ে অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবি তোলেন চিত্রদীপ। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে আগেই জানিয়েছিলেন, কোনওরকম অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটলে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে। সেইমতো শিক্ষকের বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি বিষয়টির। মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় চিত্রদীপের মতামতের বিরোধিতা করে পোস্ট দেওয়া হয়। জানানো হয়, চিত্রদীপ সোমের মতামতের তীব্র বিরোধিতা করছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগের জন্য গর্বিত। সেই পোস্টেই জানানো হয়, চিত্রদীপ স্কুল শিক্ষকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
চিত্রদীপ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসক হিসেবে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে আমি খুশি। তাঁর এই সিদ্ধান্ত আমার বুকে বল জুগিয়েছে। তাঁর এই বলিষ্ঠ পদক্ষেপে আমার উপর বদনামের কালী যাতে মুছে যায়, সেদিকেই তাকিয়ে আছি। এদিকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, খতিয়ে দেখা হচ্ছে শিক্ষক চিত্রজীপ সোমের বিষয়টি। সিবিএসই বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব। কথা বলব অধ্যক্ষার সঙ্গেও। কী এমন ঘটল, যে পরিস্থিতিতে শিক্ষককে ইস্তফা পর্যন্ত দিতে হল।