রাজ্যপাল আমাদের অহংকার! প্রথা ভাঙা হয়েছে বিধানসভায়, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী
রাজ্যপাল আমাদের অহংকার! প্রথা ভাঙা হয়েছে বিধানসভায়, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী
বিধানসভার (assembly) গরিমা নষ্ট হওয়ার অভিযোগ করার পাশাপাশি এদিন স্পিকারদের সর্বভারতীয় সম্মেলনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (jagdeep dhankhar) নিশানা করেছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (biman banerjee) । বিকেলেই তার পাল্টা জবাব দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (suvendua adhikari) । রাজ্যপালকে তাদের অহংকার বলে বর্ণনা করেছেন নন্দীগ্রামে বিজেপি বিধায়ক।
পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হয়নি দলত্যাগ বিরোধী আইন
এদিন বিকেলে বিধানসভার বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন করে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, দেশের সব রাজ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হলেও, গত সাড়ে দশ বছরে বিধানসভায় দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়নি। গতবার ৫০ জনের মতো বিধায়ক এদিক-ওদিক করেছেন, দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়নি। এবার ৪ জন হয়ে গিয়েছে। চিঠি দেওয়া হলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মনিপুর বিধানসভার একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নিদেশ আছে বিধানসভার অধ্যক্ষকে তিনমাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে মুকুল রায়ের মামলায় ইতিমধ্যেই তিনমাস পেরিয়ে গিয়েছে। তারা ২৩ সেপ্টেম্বর মুকুল রায়ের শুনানিতে অংশগ্রহণ করবেন। কিছু না হলে ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রথা ভাঙা হয়েছে বিধানসভায়
এদিন শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, বিধানসভায় প্রথা ভাঙা হয়েছে। পিএসির চেয়ারম্যান পদ বিজেপিকে না দেওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, জনস্বার্থেই মামলাটি করা হয়েছে। রাজ্য সরকার অর্থ সংগ্রহ করে, কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ দেয়, রাজ্য সরকার পরিকল্পনা তৈরি করে, আমলারা তা কার্যকর করে। আর হিসেব পরীক্ষা করবে বিরোধীরা। এটাই নিয়ম, বলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখানে জনস্বার্থ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এখানে সব কাজই রাজ্য সরকার করতে চায়। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ যদি সব বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন, তাহলে জনস্বার্থ বিঘ্নিত হত না। তিনি বলেন, এই মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে, সবাই ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আইন মেনে কাজ করলে ইতিবাচক সহযোগিতা
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আইন মেনে কাজ করলে, অন্য রাজ্যের বিধানসভাগুলির মতো পদ্ধতি অনুসরণ করলে বিজেপির তরফ থেকে বিধানসভায় ইতিবাচক সহযোগিতা করা হবে। প্রসঙ্গত বিজেপির তরফ থেকে একদিকে যেমন পিএসির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে প্রথা ভাঙার অভিযোগ করা হয়েছে, অন্যদিকে স্পিকার দলত্যাগ বিরোধী আইন মেনে বিজেপি থেকে দলবদল করে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়কদের সদস্যদপ খারিজ করছেন না বলে অভিযোগ।
গরিমা আর আইনের তফাত
বিধায়করা কোনও বিষয়ে ফয়শালা করতে আদালতে চলে যাচ্ছেন, যা বিধানসভাতেও করা যায়, এদিন মন্তব্য করেছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গরিমা ও আইনের তফাত রয়েছে। তিনি গরিমার ব্যাখ্যা দিতে না পারলেও, যদি আইন মেনে কিছু করতে হয়, তাহলে আইন মেনে চলা উচিত। আর যদি কোথাও মনে হয়, আইন মানা হচ্ছে না, তাহলে তারা (বিজেপি) যেমন আইনে আশ্রয় নিয়েছে, উনারাও তা নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
রাজ্যপাল আমাদের অহংকার
রাজ্যপাল নিয়ে অধ্যক্ষের অভিযোগ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, যেহেতু রাজ্যপাল প্রসঙ্গে বলেছেন, সেহেতু সেটা স্পষ্ট করতে পারেন রাজ্যপালই। রাজ্যপাল তাদের অহংকার বলেও মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, জগদীপ ধনখড় শুধু একজন রাজ্যপাল নন, তিনি একজন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রাক্তন সাংসদ, প্রাক্তন বিধায়ক এবং সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবীও তিনি। প্রসঙ্গত এদিন স্পিকার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভার কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছিলেন।
ফের পিসি-ভাইপোর কথা উল্লেখ
এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, বিজেপির তরফ থেকে কি রাজ্যসভায় প্রার্থী দেওয়া হবে, উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বিজেপি সর্বভারতীয় দল, তাই এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের দল পিসি-ভাইপো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নয় বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন, পিসি বললেন নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াবেন, আর ভাইপো বললেন পিসি দাঁড়াবেন ভবানীপুর থেকে, এটা বিজেপিতে বলা যায় না।