প্রার্থী নন ঠিকই, তবু তমলুকে লড়াইটা কিন্তু শুভেন্দুরই
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদের কী আর লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর উপায় আছে?গত বিধানসভায় হারানো হলদিয়া, তমলুক ও পাঁশকুড়া পূর্ব— তিন-তিনটি আসন পুনরূদ্ধারের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি।
তমলুক, ১৯ নভেম্বর : তিনি প্রার্থী নন, কিন্তু লড়াইটা তাঁরই। এ লড়াই মর্যাদার। গতবারের মার্জিন ধরে রাখতে না পারলে যে মান থাকবে না তাঁর। গত বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদের কী আর লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর উপায় আছে? মার্জিন বাড়ানোর পাশাপাশি গত বিধানসভায় হারানো হলদিয়া, তমলুক ও পাঁশকুড়া পূর্ব- তিন-তিনটি আসন পুনরূদ্ধারের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি।
এদিকে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে নোট বিতল ইস্যু। অ্যাকাউন্ট বন্দি টাকা, টাকা নেই মানুষের হাতে। ভাঁড়ারে টান পড়েছে। মানুষ তাই বুথমুখী না হয়ে ছুটছেন ব্যাঙ্ক আর এটিএমে। শুভেন্দুবাবু বলছেন, বিরোধীরা কোনও বাধাই নয়, নোট দুর্ভোগই মার্জিন বাড়ার পিছনে বাধার পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
এবার তমলুক লোকসভা উপ-নির্বাচনে খাতায়-কলমে চতুর্মুর্খী লড়াই। যদিও কংগ্রেসের অস্তিত্ব দূরবীন দিয়ে দেখতে হচ্ছে। বাংলার শাসক দলের বিরুদ্ধে মূল লড়াই সিপিএমেরই। বিজেপি ভোট বাড়াতে সচেষ্ট। আজ তমলুকে লড়াইয়ের ময়দানে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী বনাম সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মী মন্দিরা পান্ডা। বিজেপি-র প্রার্থী অধ্যাপক অম্বুজ মোহান্তি। আর কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন শিক্ষক পার্থ বটব্যাল।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে বিগত ২০১৪ নির্বাচনে ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৮১ ভোটে জিতেছিলেন শুভেন্দু। প্রতিটি কেন্দ্রেই লিড ছিল শুভেন্দুর। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অধীন মাত্র চারটি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। সেগুলি হল ময়না, নন্দকুমার, মহিষাদল এবং নন্দীগ্রাম। তমলুক, পাঁশকুড়া-পূর্ব, হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হন কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থীরা। এবারই সেই অস্বস্তি কাটিয়ে উঠতে চাইছেন শুভেন্দু। এ ব্যাপারে তিনি আশাবাদীও। শুধু মার্জিন নিয়েই তিনি চিন্তায়।
উল্টোদিকে এই ভোট লড়াইয়ে কালো টাকার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপেই ভরসা বিজেপি-র। আরও একটি ফ্যাক্টর তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষণ শেঠ এখন বিজেপি-তে। নন্দীগ্রামের ঘটনায় অভিযুক্ত নেতাকে দলে নিয়ে কতটা লাভবান হল বিজেপি, তার হিসেবও দেবে এবার তমলুকের উপ-নির্বাচন।
গত বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের জোট ছিল। এ বার জোট না থাকায় বাড়তি সুবিধা পাবে তৃণমূল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে তেমন সুবিধা হবে না। কারণ কংগ্রেসের ভোট দু'ভাগে ভাগ হয়েছিল গত বিধানসভা নির্বাচনে। জোট মানতে না পেরে অনেক কংগ্রেসীই ভোট দিয়েছিল তৃণমূলকে। সেই ভোটের একটা বড় অংশ আবার ফিরে যাবে কংগ্রেসে।