রসগোল্লা তুমি কার? জোর তরজা ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে!
কলকাতা/ভুবনেশ্বর, ২৬ আগস্ট : রসগোল্লা বললেই প্রথমে মনে পড়ে কলকাতা আর বাঙালি। কিন্তু তা বললে মানছে কে? পড়শি রাজ্য ওড়িশা তো সে কথা মানতেই রাজি নয়। ছানার রসালো এই মিষ্টি আসলে তাদের রাজ্যেরই এই বলে আওয়াজ চড়িয়েছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গও তার অমূল্যধন ছানার রসালো রসগোল্লার কপিরাইট ছাড়তে রাজি নয়। আর এই নিয়েই পড়শি দুই রাজ্যের মধ্যে শুরু হয়েছে জোর তরজা।[১০ টি ভিন্ন স্বাদের ভারতীয় মিষ্টান্ন]
ওড়িশার দাবি, রসগোল্লার ভৌগলিক নির্দেশক ছাপের অধিকার বা জিআই ট্যাগ দিতে হবে তাদের রাজ্য়কেই। তাদের দাবি, রথযাত্রার সময় প্রসাদে রসগোল্লা দেওয়া হত। রথযাত্রা উৎসবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ রসগোল্লা। দ্বাদশ শতাব্দীর সময় থেকেই মিষ্টান্নের প্রচলন চলছে। এবং এই মিষ্টির উদ্ভাবন হয়েছে ওড়িশাতেই। [বাঙালি উৎসব মিষ্টিমুখ ছাড়া ভাবাই যায় না]
এদিকে বাংলার দাবি, ১৮৬৮ সালে কলকাতার নবীন চন্দ্র দাস বর্তমান রসগোল্লার প্রথম তৈরি করেছিলেন। ছানা আর সুজি মিশিয়ে চিনির রসে মিশিয়ে এই অদ্ভুদ সুন্দর মিষ্টান্নটির সৃষ্টি করেন। টিই রসগোল্লার আদি ও আসল রেসিপি। [দাম নিয়ন্ত্রণের নামে আলুর রফতানি বন্ধ করতে তৎপর রাজ্যপুলিশ, ক্ষেপে লাল ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড]
এই সমরে এবার নেমে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সরকারও। রসগোল্লার জিআই ট্যাগ বাংলার নামে নথিভুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যে কাগজপত্র তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আবেদন জমা দেওয়াক আগে নথিপত্র তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। [ওড়িশায় ডাইনি সন্দেহে প্রৌঢ়াকে বিবস্ত্র করে মারধর, অত্যাচার চলল ১২ ঘন্টা]
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সদস্যদের দাবি, ওড়িশাতেই প্রথম তৈরি হয় রসগোল্লা। ভগবান জগন্নাথের সঙ্গীনী লক্ষ্মী দেবীকে এই মিষ্টান্ন নিবেদন করা হয় যাতে তিনি রথযাত্রায় সঙ্গে না যান।
এদিকে নবীন চন্দ্র দাসের প্রপৌত্র ধীমান দাসের কথায়, ভগবান জগন্নাথকে যে মিষ্টান্ন দেওয়া হয়, তা ছানা থেকে তৈরি হয় না, তাই তাকে রসগোল্লাও বলা যায় না। ওড়িশার মিষ্টি অন্যরকম দেখতে এবং তৈরির প্রক্রিয়াও ভিন্ন। [বিরিয়ানির ইতিহাস-ভূগোল]
এই তরজা তো এখনও চলছে। জগন্নাথদেবের সাম্প্রতিক নবকলেবর যাত্রার পর এই বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেখা যাক জল আর কত দুর গড়ায়। ওড়িশার মুখে হাসি ফুটবে নাকি বাংলাই গাইবে জয়গান তা দেখার জন্য অপেক্ষা তো করতেই হবে।