তৃণমূলে শুরু থেকে শেষ, দু'দশকের বেশি সময়ের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন শুভেন্দু
তৃণমূলে শুরু থেকে শেষ, দু'দশকের বেশি সময়ের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন শুভেন্দু
এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (mamata banerjee) কাছে চিঠি পাঠিয়ে দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (suvendu adhikari)। তাঁর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূলের সঙ্গে ২০ বছরের বেশি সময়ের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। তৃণমূলে কাজ করতে পেরে তিনি ধন্য বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজনীতিতে হাতে খড়ি কংগ্রেসের হয়ে
আটের দশকের শেষের দিকে কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজে ছাত্র রাজনীতিতে হাতে খড়ি। ছাত্র পরিষদের হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জয়ী হন। এরপর কাঁথি পুরসভার নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে কাউন্সিলর হয়েছিলেন।
তৃণমূল গঠন হওয়ার বেশ কিছুদিন পরে যোগদান
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। তবে সেই সময় তৃণমূলে যোগদান করেননি তিনি কিংবা পরিবারের কোনও সদস্য। এরপর অবশ্য বছর খানেকের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর বাবা শিশির অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেন। পরেই ১৯৯৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী নীতীশ সেনগুপ্তের জয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন।
পরপর দুই নির্বাচনে হার
২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুগবেড়িয়া কেন্দ্র থেকে কিরণময় নন্দের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, কিন্তু হেরে যান। এরপর ২০০৪ সালে তমলুক কেন্দ্রে লক্ষ্মণ শেঠের কাছে পরাজিত হন তিনি।
দক্ষিণ কাঁথি কেন্দ্রে জয়ের পরেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন তিনি। সেই বছরের শেষ থেকেই কার্যত নন্দীগ্রাম আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। বছর শেষে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের বিতর্কিত নোটিশকে ঘিরে আন্দোলন ছড়িয়ে পরে নন্দীগ্রামে। ভূমি উচ্ছেন প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে হওয়া আন্দোলেন প্রধান মুখ হয়ে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী।
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন তিনি। সেই বছরের শেষ থেকেই কার্যত নন্দীগ্রাম আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। বছর শেষে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের বিতর্কিত নোটিশকে ঘিরে আন্দোলন ছড়িয়ে পরে নন্দীগ্রামে। ভূমি উচ্ছেন প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে হওয়া আন্দোলেন প্রধান মুখ হয়ে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী।
২০০৮ সালে সিপিএমকে হারিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। সেই জয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই বছরেই যুব তৃণমূলের সভাপতি করা হয়েছিল তাঁকে। পরের বছরেই লোকসভা নির্বাচনে তমলুক কেন্দ্রে লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। দু বছরের মধ্যেই রাজ্যে ক্ষমতার পালাপদল এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টির মধ্যে সবকটি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল। দক্ষিণ কাঁথি থেকে বিধায়ক হন শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। ২০১৪ সালেও তমলুক কেন্দ্র থেকে জয়ী হন তিনি। সেই বছরেই তাঁকে সরিয়ে সৌমিত্র খাঁকে যুব তৃণমূলের সভাপতি পদে বসানো হয়।
একাধিক জেলায় সংগঠনের দায়িত্ব
পরের বছরেই অবশ্য তাঁকে একাধিক জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক করা হয়। কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত মালদহ ও মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সংগঠনের দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়। পরেও আরও একাধিক জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ছটি জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি।
২০১৬ থেকে রাজ্যের মন্ত্রী, ২০২০-তে ইস্তফা
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন তিনি। রাজ্য মন্ত্রিসভায় একাধিক দফতরের দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়। সেই দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দেন নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। তার আগেই ছাড়েন এইচআরবিসি এবং হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পদ।
২০২০-র শুরু থেকেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ
এই বছরের শুরু থেকেই দলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছিলেন তিনি। ফেব্রুয়ারিতে দিদিকে বলো কর্মসূচি এবং বাংলার গর্ব মমতা কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে। মার্চে কাঁথির জনসভায় তিনি বলেছিলেন, রাজনীতিতে যাঁরা জনবিচ্ছিন্ন, তাঁদের কথায় রাজনীতি তিনি মেনে নেবেন না। তিনি নিজের মতো করে রাজনীতি করেন বলেও জানিয়েছিলেন। অক্টোবরে বিজয়া সম্মিলনী এবং নভেম্বরে নন্দীগ্রাম দিবস ক্ষোভ আরও বেরিয়ে আসতে থাকে। তবে কোথাও তিনি তৃণমূল কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন।
তৃণমূল দলটাই আর থাকবে না, কটাক্ষ দিলীপের, বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে 'মত্ত ষাঁড়' বলে আক্রমণ সৌগতর