'চ্যালেঞ্জ' সরাসরি কালীঘাটকে! এবার মমতার খাস তালুকে শুভেন্দু অনুগামীদের 'হানা'
দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টার ঘিরে ফের চাঞ্চল্য ছড়াল রাজ্য রাজনীতিতে। এদিন সকাল থেকে দক্ষিণ কলকাতার যদবপুর, গোলপার্ক, বাসন্তী দেবী কলেজ, রাসবিহারী মোড়, গড়িয়াহাটে দাদার অনুগামীদের তরফে লাগানো পোস্টার দেখা গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘআটের বাড়ির এত কাছে এই পোস্টার ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে।

তৃণমূলের 'কোর কমিটি'তে ঠাঁই পাননি শুভেন্দু
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মতো সময় থেকে শুভেন্দু পাশে মমতার ছায়াসঙ্গী হলেও কখনওই তৃণমূলের 'কোর কমিটি'তে তাঁর ঠাঁই ছিল না। অর্থাৎ যাঁরা ২৪ ঘণ্টা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকেন বা থাকার সুযোগ পান। এই তালিকায় বর্তমানে ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং আগে মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের নাম থাকলেও নেই শুভেন্দুর।

দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে শুভেন্দুর
এই আবহেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে শুভেন্দুর। এদিন খবর মেলে, দাদার অনুগামীদের তরফে লাগানো পোস্টারে লেখা রয়েছে, 'মানুষের কাজ করতে পদ লাগে না, আমরা দাদার অনুগামী।' এদিকে খাস দক্ষিণ কলকাতাতে শুভেন্দুর নামে পোস্টার লাগানো নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এর আগে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার সহ একাধিক স্থানে শুভেন্দুর নামে পোস্টার পড়েছিল।

সরাসরি কালীঘাটের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ?
নন্দীগ্রামের পরবর্তী সময়ে কখনও সাংসদ হয়েছেন। কখনও বিধায়ক। কখনও চার-পাঁচটি জেলার দায়িত্বে। কখনও যুব তৃণমূলের দায়িত্বে। কখনও বিভিন্ন কমিটির দায়িত্বে। কখনও সংসদীয় কমিটিতেও। কিন্তু মমতার কোর কমিটিতে কখনওই ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। তবে, নেত্রী যখন যা দায়িত্ব দিয়েছেন, নিষ্ঠা ভরে পালন করেছেন। এবার যেন সেই মমতাকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি হচ্ছেন শুভেন্দু। কালীঘাটের কাছে এই পোস্টার ঘিরে এখনও তাই রাজ্য রাজনীতিতে জোর তরজা।

অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠক শুভেন্দুর
এর আগে বুধবার দুপুরেই সুর কেটে গিয়েছিল মঙ্গলবার রাতের। শীতলতা যেন আরও বেড়েছে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। বিভিন্ন জেলার অনুগামীদের নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বৈঠক করলেন। এই আবহে বুধবার কন্টাই কোঅপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক লিমিটেডে গিয়েও দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন শুভেন্দু। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে বাড়ি ফেরেন শুভেন্দু। ফিরলেন দাদার অনুগামীরাও। তাহলে কি আগামী রবিবাসরীয় দুপুরে তৃণমূলে সেই কাঙ্ক্ষিত অঘটন ঘটতে চলেছে?

শুভেন্দু-অভিষেক বৈঠক নিয়ে ছন্দপতন
মঙ্গলবার প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শেই বৈঠকে বসেন শুভেন্দু ও অভিষেক। বেশ ভালোই নাকি কথাবার্তা হয়। প্রায় মাস চারেক বাদে দিদির সঙ্গেও কথা হয়েছিল অধিকারী পরিবারের মেজ ছেলের। তারপর বৈঠকের সামান্য কিছু অংশ সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেছিলেন সৌগত রায়। কালীঘাটের অন্দরের খবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা বলছিলেন পুরো কাজটাই হয়েছিল ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে। তিনিই নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অভিষেকের সঙ্গে কথা বলে সৌগতকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে বলেছিলেন।

তাল কাটে শুভেন্দু পর্বে
সৌগতর এহেন পদক্ষেপেই তাল কাটে শুভেন্দু পর্বে। সাতসকালে একাধিক সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। সৌগত রায়কে অভিযোগও জানান। কেন এভাবে তাঁর অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমের কাছে খবর প্রকাশিত হল, তা নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যাও চান। যদিও পরিস্থিতি বুঝে সৌগত কিছুটা চুপ থাকার চেষ্টা করেন। আবার অন্য মনোভাব দেখাতেও ছাড়েন না তিনি। সরাসরি শুভেন্দুকে আক্রমণ না করলেও সৌগত হাবেভাবে বুঝিয়ে দেন অধিকারী গড়ের মেজ ছেলে মত বদলাতে পারেন। সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।
জোড়াফুল ছেড়ে পদ্মফুল? সৌগতকে উষ্মা প্রকাশের পর বিজেপি নেতার সঙ্গে ফোনালাপ শুভেন্দুর!