নির্বাসন কাটিয়ে গড়বেতায় ফিরছেন সুশান্ত ঘোষ, হারানো সাম্রাজ্য ফের ওড়াবেন লালঝান্ডা?
ছয়বারের বিধায়ক থাকার পর আট বছরের দীর্ঘ নির্বাসন। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পেতেই এবার গড়বেতায় ফিরতে চলেছেন প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। সুশান্ত ঘোষের অনুগামীদের তরফে এমনটাই জানা গিয়েছে। এককালের দাপুটে নেতার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই এখন প্রচুর প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে। গড়বেতাতে ফেরার পর কী হবে তার পরবর্তী পদক্ষেপ সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলের।

সুপ্রিম রায়ের পর সিপিআইএম-এর সঙ্গে দূরত্ব কমবে সুশান্তর?
সুশান্তকে ঘিরে যেই জল্পনা তুঙ্গে, তা হল, সুপ্রিমকোর্টের রায়ের পর সিপিআইএম-এর সঙ্গে দূরত্ব কমবে এই বর্ষীয়ান নেতার? নাকি অন্য পথে হাঁটা লাগাবেন তিনি? উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে দলবিরোধী কাজের জন্য পার্টি ঘোষকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করেছে, যে শাস্তি তাঁর এখনও বহাল৷ শাস্তি নিয়ে একবারও পার্টি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি তিনি৷ কিন্তু গড়বেতা এবং এবং সংলগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তৃত অঞ্চলে আজও তাঁর অনুগামীর সংখ্যা প্রচুর।

সিপিআইএম-র হারানো সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার
তাই এখন প্রশ্ন হচ্ছে পার্টির সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিআইএম-র হারানো সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টার প্রধান মুখ কি আবার হয়ে উঠবেন সুশান্ত ঘোষ? নাকি পার্টির সঙ্গে আরও দূরত্ব বাড়বে তার? এর ফলশ্রতিতে হয় তাঁর রাজনৈতিক সন্ন্যাস, নয় অন্য কোনও দল গঠন, নাকি অন্য কোনও দলে যোগদান এই নিয়েই জল্পনা চলেছে রাজনৈতিক মহলে৷

পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনৈতিক পটভূমিকায় বদল
এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনৈতিক পটভূমিকায় অনেক অদলবদল হয়েছে৷ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এককালের লাল কেল্লার এই জেলায় প্রধান শক্তি আজ বিজেপি৷ এর মধ্যে ঘোষের প্রত্যাবর্তনে জেলায় রাজনৈতিক নাটক আরও জমবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহল৷

কঙ্কাল কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুশান্ত ঘোষ
২০১১ সালে বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে গ্রেফতার হন ঘোষ৷ তার পরের বছরই জামিন পান তিনি৷ কিন্তু ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট সুশান্তকে জামিন দিলেও শর্ত ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ফিরতে পারবেন না৷ টানা সাত বছর আইনি লড়াই লড়েছেন তিনি৷ এবার ঘরে ফেরার পালা।

জেলায় ফেরার পথে কোনও বাধা রইলো না
এর আগে সুশান্ত গড়বেতায় ঢুকলে ফের অশান্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়ে অভিযোগ করেছিল রাজ্য সরকার৷ তার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন ঘোষ৷ অবশেষে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে জেলায় না ফেরার শর্ত উঠিয়ে নেওয়া হল৷ ফলে তাঁর আর জেলায় ফেরার পথে কোনও বাধা রইলো না।

লালঝান্ডার প্রতি অকৃত্রিম দায়বদ্ধতা
সূত্রের খবর, একসময় টানা তিরিশ ঘণ্টার বেশি হাতলবিহীন চেয়ারে বসিয়ে সিআইডি জেরা করেও ওঁর মুখ দিয়ে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলাতে পারেনি৷ তাঁর অনুগামীদের মত, সুশান্তের চোয়াল শক্ত করা জেদের কাছে বার বার হার মেনেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ এই দশকের সব থেকে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷ একের পর এক সাজানো অভিযোগ৷ ওকে টলানো যায়নি লালঝান্ডার প্রতি অকৃত্রিম দায়বদ্ধতা থেকে৷
সৌগত-সুদীপ প্রচেষ্টায় শুভেন্দুর মানভঞ্জন? নজর রামনগরের 'মেগা শো'-এর দিকে