স্ত্রী-র গোচরেই শিল্পার সঙ্গে সম্পর্ক রাজীবের! দুর্গাপুরের যুবতী খুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য
শিল্পা খুনে মণীষা ও তাঁর স্বামী স্টেট ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রাজীব কুমারকে এখন ক্রমাগত জেরা করছে পুলিশ। এই জেরাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শিল্পার সঙ্গে স্বামীর যে শারীরিক সম্পর্ক আছে তা কি জানত রাজীব কুমারের স্ত্রী মণীষা কুমারী? এখন এই প্রশ্ন সামনে আসছে। রাঁচির উইমেনস কলেজের ছাত্রী মণীষা। তাঁর স্কুলিং রাঁচিরই ফ্রান্সিস স্কুলে। যা মিশনারি স্কুল বলেই জানা যাচ্ছে। মিশনারী স্কুলে শিক্ষায় শিক্ষিত মণীষা মানসিকভাবে খুবই যে আধুনিক তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই কি স্বামী রাজীব কুমারের সঙ্গে শিল্পা-র অস্বাভাবিক মেলামেশা-কে তেমন আমল দিতে চায়নি মণীষা? শিল্পা খুনের পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে এমনই তথ্য। মণীষা নিজেও স্টেটব্যাঙ্কের দুর্গাপুরের ফুলঝোড় শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার।
[আরও পড়ুন:দুর্গাপুরে আবাসনে ট্রলিব্যাগ থেকে উদ্ধার বাঁকুড়ার ব্যাঙ্ককর্মীর দেহ]
শিল্পা খুনে মণীষা ও তাঁর স্বামী স্টেট ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রাজীব কুমারকে এখন ক্রমাগত জেরা করছে পুলিশ। এই জেরাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে মিলে মণীষা রানিগঞ্জে একটি খালি ফ্ল্য়াটে শিল্পা আগরওয়ালের পরনের পোশাক এবং মোবাইল লুকিয়ে রেখেছিল। রানিগঞ্জে এই খালি ফ্ল্যাটটিও রাজীব ভাড়া নিয়ে রেখেছিল। স্বামী-স্ত্রী ও এক সন্তানের সংসারে আরও একটি আলাদা ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে হল কেন? পুলিশি উত্তরে মণীষা বা রাজীব কেউই সদর্থক কোনও উত্তর দিতে পারেনি। যদিও, রাজীব ও মণীষার দাবি তারা ফ্ল্যাটটি ভাড়া কাজের সুবিধার জন্য। কারণ, রাজীবের কর্মস্থল রানিগঞ্জ। কাজে আটকে গেলে এই ফ্ল্য়াটটিতে রাজীব থেকে যেত।
রানিগঞ্জের এই ফ্ল্যাটে গাদা-গাদা কণ্ডোমের প্যাকেট এদিক-ওদিকে ছড়ানো! প্রকাশ্যে পড়ে রয়েছে যৌন উত্তেজনা বাড়ানোর ওষুধ! এমনকী জন্মনিরোধক সব ট্য়াবলেট। রাজীবকে জেরা করে জানা গিয়েছে এই ভাড়া করা ফ্ল্যাটেই শিল্পা এসে থাকতেন। তাহলে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির এমন সব ওষুধ-পত্র কি পরকীয়া সম্পর্কের উষ্ণতার মাত্রা বাড়ানোর জন্য? এমন প্রশ্নও রাজীবকে করেছেন গোয়েন্দারা। রানিগঞ্জের ওই ভাড়া করা ফ্ল্যাটটা নয়, বেনাচিতিতে যে ফ্ল্যাটে স্ত্রী ও সন্তানকে সঙ্গে করে রাজীব থাকে সেখানেও অসংখ্য জন্মনিরোধক ট্যাবলেট, যৌন উত্তেজনা বাড়ানোর ওষুধ পাওয়া গিয়েছে।পুলিশের কাছে মণীষার দাবি, রাঁচি থেকে ফিরেও নাকে সে এত ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা টের পায়নি। রাজীব স্বাভাবিকভাবেই তার সঙ্গে কথা বলছিল। কিন্তু, ফ্রিজ খুলতেই শিল্পার দেহ দেখতে পায় মণীষা। এরপরই রাজীব সমস্ত ঘটনা মণীষার সামনে খুলে বলেছিল। পুলিশের দাবি, এমন এক ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা জানার পরও মণীষা পুলিশকে ফোন করেনি। উল্টে স্বামীর সঙ্গে মিলে দেহ লোপাটের চেষ্টা করে। এমনকী তথ্য-প্রমাণ লোপাটেও স্বামীকে মদত করেছিল। সুতরাং, কী ভাবে মণীষা পুরো ঘটনায় নির্দোষ হতে পারে।
পুলিশি জেরায় নাকি মণীষা স্বীকার করেছেন, শিল্পার দেহ লোপাটের বিষয়টি তার জানা ছিল। এমনকী, স্বামীর সঙ্গে গিয়ে রানিগঞ্জের ফ্ল্যাটেও শিল্পার পোশাক, ফোন লুকিয়ে এসেছিল। যদিও, পুলিশের দাবি মানতে রাজি নন মণীষার আইনজীবী। তাঁর দাবি, মণীষাকে অযথা ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যা ঘটেছে তা মণীষা দুর্গাপুরে ফেরার আগে। এমনকী দেহ লোপাটের বিষয়টিও রাজীব একাই করেছিল। মণীষা এসব কিছুই জানত না। দুর্গাপুর পুলিশ অবশ্য আইনজীবীর কথাতে বিন্দুমাত্র কান দিতে চাইছে না। জেরায় উঠে আসা তথ্য এবং তথ্য-প্রমাণ সাজিয়ে আপাতত চার্জশিট তৈরির চেষ্টা করছে পুলিশ।