বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের দিকে সরাসরি আঙুল বিদ্রোহীদের, শুনে কী বললেন রাজ্য সভাপতি
বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের দিকে সরাসরি আঙুল বিদ্রোহীদের, শুনে কী বললেন রাজ্য সভাপতি
বীরভূম জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছেন বঙ্গ নেতৃত্বকে। আঙুল উঁচিয়ে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যাঁরা আমাকে ভালোবাসেন তাঁরা চুপচাপ বসে যান, কেউ বিজেপি করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি পাল্টা দিলেন বিদ্রোহী নেতাকে।
শোকজের রাস্তায় হাঁটতে পারে বিজেপি!
সরাসরি মৌচাকে ঢিল পড়ার পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছিল এবার বিদ্রোহী নেতার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিজেপি? প্রাক্তন জেলা সভাপতি বেসুরো বাজতেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে চলেছে বঙ্গ বিজেপি। বর্তমানে বিদ্রোহী নেতা রাজ্য কমিটির সদস্য, তাঁর উষ্মার পর তাঁকে অন্তত শোকজের রাস্তায় হাঁটতে পারে বিজেপি। পাল্টা বিদ্রোহী নেতা জবাব দিতে তৈরি বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
নিয়ম ভাঙলে, দলের নিয়ম মেনেই শাস্তি
ফেসবুকে বীরভূম বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের বিস্ফোরক পোস্টের পর রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, কোনও নেতাকে ভালোবেসে বিজেপি করে না কেউ। দলের নীতি আর আদর্শকে ভালোবেসে সবাই বিজেপি করে। তাই দলের নিয়ম ভাঙলে, দলের নিয়ম মেনেই বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘বিজেপি দলটা এখন কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে’
বীরভূম জেলার প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, বিজেপি পার্টির সমর্থক ও কার্যকর্তা যাঁরা আমাকে ভালোবাসেন, তাঁরা চুপচাপ বসে যান। তারপর এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিজেপি দলটা এখন কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। তাঁকে না জানিয়েই জেলা ও ব্লক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই তিনি বুজিয়ে দিতে চান যে, তিনি ফেলনা নন, জেলায় তাঁরও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। আর তা বোঝাতেই তিনি ফেসবুক পোস্টে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিজেপি ক্ষয়িষ্ণু, তবু শৃঙ্খলাভঙ্গের শাস্তিস্বরূপ ব্যবস্থা
দুধকুমারের ওই পোস্টে জেলা ও রাজ্য বিজেপি প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে। বিজেপিতে জেলায় জেলায় বিদ্রোহ বাড়ছে। সাম্প্রতির রদবদলের পর দল ছাড়ার হিড়িকও পড়েছে। অনেকে দল ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে যাচ্ছেন। তার ফলে বিজেপি ক্ষয়িষ্ণু হয়ে চলেছে। এরই মধ্যে আবার শৃঙ্খলাভঙ্গের শাস্তিস্বরূপ জেলা নেতা তথা বিধানসভার প্রার্থীকে বহিষ্কার পর্যন্ত করা হয়েছে।
আদি ও অভিজ্ঞ নেতাদের যথাযথ সম্মান এবং গুরুত্ব নেই!
এদিকে দুধকুমার মণ্ডলের ওই ফেসবুক পোস্টের পর বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন, দুধকুমারদা-র মতো মানুষ সংগঠন থেকে হারিয়ে গেলে, তা চিন্তার এবং উদ্বেগের! বর্তমানে যারা সংগঠনে আছেন, তাঁদের উচিত দুধকুমার মণ্ডলের মতো পুরনো মানুষ যারা সাংগঠনিকভাবে বলিষ্ঠ, তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং পরামর্শকে যথাযথ সম্মান এবং গুরুত্ব দিয়ে সংগঠনের সামনের সারিতে আনা। ঠিক একইভাবে অর্জুন সিংয়ের দলবদলের পরও অনুপম বলেছিলেন, "কেউ দল থেকে চলে গেলে কোনও ক্ষতি হবে না এটা বলা ঠিক নয়। দলের আত্মসমালোচনা জরুরি'।
গণইস্তফা চলছে নিচুতলায়, তারপরও হুঁশ ফেরেনি বিজেপির
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর বঙ্গ বিজেপিতে ভাহ লেগেই রয়েছে। বেসুরো বাজছেন ব্লক থেকে জেলা, জেলা থেকে রাজ্য কমিটিরে নেতারাও। গণইস্তফা পর্যন্ত চলছে নিচুতলায়। তারপরও হুঁশ ফেরেনি। বিজেপিতে বিদ্রোহ বেড়েই চলেছে। দলে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চরম আকার নিচ্ছে। নতুন রাজ্য সভাপতির আমলে তা মারাত্মক রূপ নিতে চলেছে বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি। তবু কড়া হাতে তা দমনে সিদ্ধহস্ত রাজ্য সভাপতি। দুধকুমারের পোস্টকে গুরুত্ব না দিয়েই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল।
বিদ্রোহের মাঝেই বহিষ্কার, অনুব্রত-গড়ের বিজেপি নেতাকে সাসপেন্ড করল শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি