নয়া মোড়! সিবিআইয়ের পাশাপাশি কয়লা পাচারের তদন্তে SIT গড়ল নবান্ন
কয়লা পাচার-কান্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়! কয়লা কেলেঙ্কারির সূত্রে পৌঁছতে এবার কোমর বেঁধে নামছে রাজ্যও! ইতিমধ্যে কয়লা পাচার-কান্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও আলাদা ভাবে একটি তদন্ত করছে। এবার ইসিএলের ৩৩ মামলায় আবার আলাদাভাবে সিট গঠন করল নবান্ন। শুক্রবার আসানসোল যাচ্ছে রাজ্য পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের এই তদন্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিকভাবেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল।
বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির অন্যতম অস্ত্র কয়লা এবং গরু পাচার-কান্ড। সিবিআই তদন্তে ইতিমধ্যে একগুচ্ছ তথ্য হাতে এসেছে। সিবিআইয়ের হাতে এসেছে একাধিক নাম। যাদের সঙ্গে শাসকদলের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে যোগাযোগ রয়েছে। সভা থেকে বিজেপি নেতারা সেই সমস্ত নাম ধরে তৃণমূল শীর্ষ নেতাদের আক্রমণ শানাচ্ছেন। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ম্যাডাম নারুলা প্রসঙ্গ। গত কয়েকদিন আগেই ম্যাডাম নারুলার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যে টাকা যায় সে বিষয়ে বেশ কিছু নথি সামনে এনেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিশেষ করে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা নারুলার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন প্রাক্তন এই তৃণমূল নেতা।
সভামঞ্চ থেকে রীতিমতো প্রমাণ দেখিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, গরু এবং কয়লা পাচারকাণ্ডে অনুপ মাঝি ওরফে লালার টাকা ব্যাংককে যায়। এমনকী, অভিষেকের স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কিছু নথিও পেশ করেন তিনি। যা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে শাসকদল তৃণমূল। অন্যদিকে, অভিষেকের সঙ্গে অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের ছবি দেখিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এই অবস্থায় কি পালটা তদন্ত রাজ্যের? সিট গঠন করে কি পালটা আক্রমণের হাতিয়ার খুঁজতে চাইছে শাসকদল তৃণমূল? উঠছে প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টে আংশিক স্বস্তি পেয়েছে অনুপ মাঝি ওরফে লালা। রেলওয়ে এলাকার বাইরে তদন্ত করতে গেলে অনুমতি লাগবে রাজ্যের। রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে যুগ্মভাবে তল্লাশি করতে হবে সিবিআই। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে কয়লা পাচার-কান্ডের মুল চক্রী অনুপ মাঝির দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজের আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছিলেন লালা। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয় একদিকে। অন্যদিকে, সিবিআইকেও নির্দেশে আদালত জানিয়ে দেয় যে, রাজ্যের অন্য কোথাও তল্লাশি চালাতে গেলে অবশ্যই রাজ্য প্রশাসনকে জানাতে হবে। এবং তাঁদের নিয়েই তল্লাশি অভিযান চালাতে হবে। যদিও হাইকোর্টের এই নির্দেশে অখুশি সিবিআই। হাইকোর্টের এহেন নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জানা যাচ্ছে, হাইকোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পরেই জরুরি বৈঠকে বসে সিবিআই। রাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশিতেই আপত্তি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। আর সেই কারনেই উচ্চ আদালতে রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করতে পারে সিবিআই। একদিকে সিবিআইয়ের প্রস্তুতি অন্যদিকে, পালটা সিটের তদন্ত...শেষ পর্যন্ত কোনদিকে গড়ায় সেদিকেই নজর রাজ্যবাসীর।