বিসিসিএস-এ দুর্নীতির মতোই কি এসএসসি-তেও দুর্নীতি, পরেশ অধিকারীর মেয়ের নাম ঢোকায় তুঙ্গে বিতর্ক
কয়েক মাস আগেই পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস-এর নিয়োগের পরীক্ষায় দুর্নীতিকে সামনে নিয়ে এসেছিল ওয়ানইন্ডিয়া বাংলা। এবার একইভাবে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগকে ঘিরে। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে সদ্য ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর। কারণ, এসএসসি-র এই দুর্নীতিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম স্থান পাওয়া নিয়ে।

এসএসসি-তে নিয়োগে এসসি মহিলাদের যে চূড়ান্ত ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ হয়েছিল তাতে কোথাও অঙ্কিতা অধিকারীর নাম ছিল না। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এখন যে এসসি তালিকা দেখা যাচ্ছে তাতে এক নম্বরে থেকে ববিতা বর্মণের নাম সরে গিয়ে সেখানে ঠাঁই পেয়েছে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। ওয়েটিং লিস্টে যার নাম যত উপরে থাকবে তার চাকরি পাওয়ার সুযোগটা বেশি থাকে। স্বভাবতই ববিতা বর্মণের নাম সরিয়ে কীভাবে অঙ্কিতার নাম ঢুকে গেল তা নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়।


পরে জানা যায় এই অঙ্কিতা অধিকারী আসলে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে। ওয়ানইন্ডিয়া বাংলার পক্ষ থেকে পরেশ অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, তিনি ফোন ধরেননি।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মতে, সদ্য ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ফল পাচ্ছেন পরেশ অধিকারী। গোটা কেলেঙ্কারিতে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এসএসসি-র ওয়েটিং লিস্টে স্থান পাওয়া পরীক্ষার্থীরাও গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ। ওয়েটিং লিস্টে-র পাশাপাশি এমপ্যানেলড তালিকাও প্রকাশ পেয়েছে। তাই নাম না থাকা অঙ্কিতা অধিকারীকে যদি 'রিকল' করা হয়ে থাকে তাহলেও তাঁর নাম ওয়েটিং লিস্টে থাকা উচিত নয়। এসএসসি-র মেধাতালিকা প্রকাশের আগেই কাউন্সেলিং নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। সেই মামলা চলাকালেই হাইকোর্টে মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয়। এসএসসি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ফের আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন একদল পরীক্ষার্থী। ফলে এসএসসি নিয়োগ ফের অনিশ্চিয়তার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আরও কিছু গরমিলের খবর পাওয়া গিয়েছে। নিউট্রিশনে-র মেধা তালিকায় সাহানা পারভিন নামে ভাঙরের এক পরীক্ষার্থীর নাম ছিল পাঁচ নম্বরে। তালিকা প্রকাশের আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে সাহানার নাম তালিকায় অনেক নিচে নেমে গিয়েছে। তার নামের আগে পাঁচ জনের নাম ঢুকেছে। অথচ, সাহানার স্বামীর দাবি কোনও তালিকাতেই এই পাঁচ জনের নাম ছিল না। এই নামগুলি হল- নজিবুল রহমান, আফরিন আলম, রেহানা ইয়াসমিন, সামিমা খাতুন, সাহানা নার্গিস। এই বিষয়টি নিয়ে এসএসসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেখান থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন:এনআরএস কাণ্ডের ছায়া উল্টোডাঙায়! হবু চিকিৎসকদের আচরণে প্রশ্ন]