শুভেন্দু যোগ দেবেন কোন দলে? রাহুলের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে জোর জল্পনা! মাথায় হাত বাম নেতাদের
বঙ্গ রাজনীতিতে বর্তমানে সব থেকে বড় নাম শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর কোন পথে হাঁটবেন সেই প্রশ্নের উত্তর আর মিলছেই না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পরের দিনই শুভেন্দু গিয়েছিলেন নন্দীগ্রামে। তবে সেখানেও সবাইকে নিরাশ করে দিয়ে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলিয়ে রাখেন। এবার এরই মধ্য বঙ্গ রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাহুল গান্ধী এবং শুভেন্দু অধিকারীর সম্ভাব্য বৈঠককে ঘিরে।
শুভেন্দু-বিজেপি যোগ নিয়ে জোর জল্পনা
শুভেন্দু-তৃণমূল দূরত্ব বাড়তেই জল্পনা শুরু হয়েছিল বিজেপি যোগের। বিজেপি নেতারাও যেন হাত ছড়িয়ে শুভেন্দুকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তবে এরই মাঝে অধীর চৌধুরীর গলায় শুভেন্দু অধিকারীর বন্দনা শোনা গিয়েছিল। প্রথমে সেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে সেরম কোনও তরজা না হলেও হঠাৎই রাহুল-শুভেন্দু বৈঠক ঘিরে জল্পনা শুরু হয়।
শুভেন্দু নিজের ধর্মনিরপেক্ষ তকমা নিয়ে কতটা চিন্তিত?
একদিকে যখন সারা দেশে কংগ্রেস থেকে নেতারা দল ছাড়ছেন বা বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু যদি কংগ্রেসে যোগ দেন তাহলে তা দলের জন্য বিশাল পাওনা হবে। রাজ্য রাজনীতিতে ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে যাওয়া কংগ্রেস ফের অক্সিজেন পাবে। এবং তাতে শুভেন্দুও নিজের ধর্মনিরপেক্ষ তকমা ধরে রাখতে সক্ষম হবেন। এদিকে মালদা, মুর্শিদাবাদ এলাকাতে প্রচুর নেতা রয়েছেন, যাঁরা শুভেন্দুর অনুগামী। সংখ্যালঘু এলাকার সেই নেতারা অবশ্য বিজেপি যোগ নিয়ে হয়ত ততটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন না। সেই সমীকরণ নিয়েও ভাবতে হবে শুভেন্দুকে।
রাহুল-শুভেন্দু সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে জোর জল্পনা
তবে এই রাহুল-শুভেন্দু সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে মুখে কুলুপ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। এর আগে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠক নিয়ে জল্পনা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠকের কোনও খবরই মেলেনি। তবে রাহুল-শুভেন্দু বৈঠক নিয়ে কোনও শিবিরই জল্পনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে কংগ্রেস যে শুভেন্দুকে স্বাগত জানাতে কোনও কসুর ছাড়বে না, তা বোঝা গিয়েছে।
শুভেন্দুর রাজনৈতির দর
সাম্প্রতিক কালে শুভেন্দু অধিকারীর বিভিন্ন সমাবেশ প্রমাণ করেছে যে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বেশ ভালো। যেই ভিড় এই সব সমাবেশে চোখে পড়ছে, তা থেকেই পা কাঁপতে শুরু করেছে তৃণমূলের। শুভেন্দুর জনসমর্থন নিয়ে চিন্তিত স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা। তাই তো জল মাপতে নিজেই ময়দানে নামতে চলেছেন মমতা।
কংগ্রেসের কদর অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে
এদিকে শুভেন্দু দলবদল করে কংগ্রেসে যোগ দিলে এক ধাক্কায় দলের গ্রহণযোগ্যতা, সমর্থন ও কদর অনেকটাই বেড়ে যাবে। স্বাভাবিক ভাবেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শুভেন্দু অধিকারী ও রাহুল গান্ধীর বৈঠকের সম্ভাবনা ঘিরে এখন শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
বিজেপি ছাড়া শুভেন্দুর তিন সম্ভাবনা
বিজেপি ছাড়াও তিন সম্ভাবনা একুশের আগে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়তে চলেছেন, সেই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল অনেকদিন ধরেই। বিজেপি নেতাদের নজরে ছিলেন শুভেন্দু। মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই জল্পনার পারদ চড়ছিল শুভেন্দুকে নিয়ে। তবে বিজেপির বাদে যে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু এমন সম্ভাবনাও ছিল তলায় তলায়।
অধীর চৌধুরীর আহ্বান
এর আগে স্বয়ং অধীর চৌধুরী তাঁকে আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য। যে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলেন ২০১৯ লোকসভায়, তাঁকেই আহ্বান জানিয়েছিলন অধীর চৌধুরী। তিনি জানিয়েছিলেন বিজেপি নয়, শুভেন্দুর আদর্শ জায়গা কংগ্রেসই।
মাথায় হাত পড়বে বাম নেতাদের
তবে শুভেন্দু যদি কংগ্রেসে যোগ দেন, সেই ক্ষেত্রে মাথায় হাত পড়বে বাম নেতাদের। এক তো জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদ প্রার্থী হয়ে যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। আবার হয়ত জোট থাকবেই না। কারণ নন্দীগ্রামের স্মৃতি শুভেন্দু বা সিপিআইএম, কোনও পক্ষেই এত সহজে ভুলবে বলে মনে করেন না বিশেষজ্ঞরা।