এবোলা ঠেকাতে কলকাতার যৌনকর্মীদের জন্য বিশেষ উপদেশ!
এই নির্দেশিকার পিছনে একটাই কারণ হল এবোলা। যে ভাইরাসের জেরে শয়ে শেয় প্রাণ যাচ্ছে সেই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পশ্চিম আফ্রিকায় উদ্বেগজনক। সেই কারণেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ বশত আফ্রিকার গ্রাহকের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করল দুর্বার সমিতি।
রাজ্যের ১ লক্ষ ৩০ হাজার যৌন কর্মীদের মঞ্চ দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। যৌন কর্মীদের অধিকার ও পরিচয় নিয়েই লড়াই দুর্বারের। না জেনে আফ্রিকার গ্রাহককে ঘরে তুললে হতে পারে এবোলা আক্রান্তর সংস্পর্ষে আসতে পারেন যৌন কর্মীরা। সেই কারমেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে দুর্বারের তরফে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির এক কর্মীর কথায়, "আমরা যৌনপল্লীর কর্মীদের কাছে আবেদন জানিয়েছি যাতে আফ্রিকা প্রদেশের ব্যক্তিদের গ্রাহক হিসাবে কোনওভাবেই যেন বেছে না নেন তাঁরা। কারণ এর ফলে তাঁর প্রাণহানির ঝুঁকিও হতে পারে। এবোলা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্ষে এসে আসলে তাঁদের দেহেও এবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। যার ফলে প্রাণহানিও হতে পারে। পশ্চিম আফ্রিকায় এই ভাইরাসের প্রকোপ উদ্বেগজনক, তাই প্রধানত আফ্রিকা প্রদেশের মানুষের কথাই বিশেষ করে আমরা আমাদের আবেদনে উল্লেখ করেছি।"
এবোলার উদ্বেগজনক প্রকোপের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দুর্বারের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কীভাবে যৌনকর্মীরা এবোলা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে পারবেন সে বিষয়েই এই প্রশিক্ষণ শিবির। দুর্বারের তরফে জানানো হয়েছে, হু-এ গাইডলাইন অনুযায়ী, এবোলা ভাইরাসের সংক্রমন ঘাম, লালা,আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি এবং শরীরের সংস্পর্ষে এলে হতে পারে। সেই কারণেই যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে কর্মীরা তাঁদের থেকে দূরে থাকতে পারেন এবং নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারেন তার জন্যই এই প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা।
দুর্বারের তরফে জানানো হয়েছে, যৌন সংক্রমণ রোগগুলি নিয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যৌনকর্মীদের। এবোলার প্রকোপ এখন বেশি হওয়ায় সাবধানতা বশত এই রোগ সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।
তবে দুর্বারের তরফ থেকে এও জানানো হচ্ছে, তাঁরা শুধু সতর্কতামূলক আবেদন রেখেছেন এখন তা মানা বা না মানা যৌনকর্মীদের হাতেই রয়েছে। প্রচারে শুধুমাত্র আফ্রিকা প্রদেশের ব্যক্তিদের কথা বলা হয়েছে কারণ সেখানে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি, তবে কোনও যৌনকর্মী অন্য কোনও বিদেশী গ্রাহকের ক্ষেত্রেও এবোলা আক্রান্ত হওয়ায় সংকেত পান তবে সেক্ষেত্রেও তাঁরা যেন একই পন্থা অবলম্বন করেন তার উপদেশ দেওয়া হয়েছে কর্মীদের। তবে এবোলা ভাইরাস বায়ুবাহিত রোগ নয় একটাই যা স্বস্তি।
এই প্রশিক্ষণ শুধু সোনারগাছি নয়, কলকাতা ও রাজ্যের অন্যান্য পতিতাপল্লীতেও এবোলা নিয়ে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির চালানো হবে। বিশেষ করে বন্দর ও সীমান্ত এলাকার যৌনপল্লীগুলিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ চালানো হবে বলেও দুর্বারের তরফে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্যে, হু-এ রিপোর্ট অনুযায়ী, এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার নতুন ১২৮টি খবর পাওয়া গিয়েছে। ১০ থেকে ১১ অগস্টের মধ্যে লিবেরিয়া, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওনে ৫৬টি মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ১,৯৭৫ জনের এবোলায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে এবং এই সংক্রমণ ভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যুর সংখ্যা ১,০৬৯ -এ পৌঁছিয়েছে।