তৃণমূলে ফিরতে বাধা কোথায় স্পষ্ট হল অবশেষে! পার্থকে বৈশাখী-ফ্যাক্টর বোঝালেন শোভন
তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে গিয়েও সক্রিয় নন। একা হাতে তিন মন্ত্রক আবার কলকাতা পুরসভার মেয়রের দায়িত্ব সামলেছেন। ছিলেন তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি।
তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে গিয়েও সক্রিয় নন। একা হাতে তিন মন্ত্রক আবার কলকাতা পুরসভার মেয়রের দায়িত্ব সামলেছেন। ছিলেন তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি। এহেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এখন ঘরবন্দি। জানিয়েছেন, সময় হলেই তিনি সামনে আসবেন। তাঁর সোজাসাপ্টা প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়ে দিলেন তৃণমূলে ফিরতে তাঁরা বাধা কোথায়।
বৈশাখীকে নিয়ে তাঁর আবেগই তৃণমূলে ফেরার পথে বাধা!
বিজেপির পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননের সঙ্গে বৈঠকের পরই তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় যোগাযোগ করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পার্থকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন শোভন, কেন তাঁর তৃণমূলে ফেরা হচ্ছে না, বাধা কোথায়। এখন তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি তিনি কী করবেন, তবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর আবেগই তৃণমূলে ফিরতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
শোভনের ফেরার শর্ত স্পষ্ট করে দিয়েছেন পার্থকে
শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজে মুখেই জানিয়েছেন, তৃণমূল মহাসচিব আমার সঙ্গে বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। আমি তাঁকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি আমার অবস্থান। বৈশাখীকে যেভাবে সরানো হয়েছে তাঁর চাকরি থেকে। যেভাবে তাঁর মর্যাদার হানি করা হয়েছে। কেবল আমার জন্য বৈশাখীকে যা সহ্য করতে হয়েছে, সেটা অনভিপ্রেত। আমার ফেরার শর্তে বৈশাখী সব ফিরে পাবে, তা চাইনি। এটা একেবারেই অভিপ্রেত নয়।
বৈশাখীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হয়নি, শোভনের ফেরা হয়নি
অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন বৈশাখীর সঙ্গে যা হয়েছে, সেইসব চুকিয়ে নিলে তারপর তিনি তৃণমূলে ফিরতে পারেন কিংবা তিনি ভেবে দেখবেন তৃণমূলে ফিরবেন কি না। এর আগে বারবার মমতা বন্যো পাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডাকে বৈশাখী গিয়েছেন, বৈঠক করেছেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ সহবস্থান হয়নি। তাই শোভনেরও ফেরা হয়নি, তা তিনি নিজেই স্পষ্ট করে দিলেন শুক্রবার রাতে।
শোভন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন তাঁর তৃণমূলের প্রতি বৈরাগ্য
শুক্রবার জনপ্রিয় এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে শোভন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন তাঁর তৃণমূলের প্রতি বৈরাগ্য। তারপরও অবশ্য জোর দিয়ে তিনি বলেননি তিনি বিজেপিতেই থাকছেন এবং সক্রিয় হচ্ছেন। আর তাঁর ঘরওয়াপসি নিয়ে যত আলোচনাই চলুক না কেন, কীসের উপর নির্ভর করে আছে শোভনের ভাগ্য, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
মেননের পরই শোভন-সকাশে পার্থ, স্পষ্ট জবাব আলোচনায়
বিগত তিন-চারদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনায় পারদ চড়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি প্রকাশ্যে এসেছেন। মেননের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি কী অবস্থান নিচ্ছেন তা জানিয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁকেও তিনি স্পষ্ট উত্তর দিয়েছেন।
সহকর্মীদের সুযোগ দিইনি রাজনৈতিক মত বিনিময় করার
শোভন বলেছেন, ভাইফোঁটা বা চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি তৃণমূল নেতাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেখানে কোনও রাজনৈতিক মত বিনিময় হয়নি। আমার পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তাঁরাও আমাকে রাজনৈতিক মত বিনিময়ের জন্য কোনও চাপ দেননি বা জিজ্ঞাসা করেমনি। আর আমিও সুযোগ দিইনি রাজনৈতিক মত বিনিময় করার।
অন্তরাল থেকে বেরনো শুধু হাতে গোনা কয়েকটি ইস্যুতে
শোভন চট্টোপাধ্যায় এক বছরের বেশি বিজেপিতে রয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও কর্মসূচিতে অংশ নেননি। তিনি আদৌ সক্রিয় হননি রাজনীতিতে। এই একবছরে তিনি অজ্ঞাতবাসেই ছিলেন একপ্রকার। অন্তরাল থেকে বেরনো শুধু হাতে গোনা কয়েকটি ইস্যুতে। শেষ তিনি সরব হয়েছিলেন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর তৃণমূলের পুরসভার বিরুদ্ধে।
রত্নাকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়ার খবরেই জল্পনা শুরু
এবার রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়ার খবর হতেই শোভনকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। আর সেই জল্পনার মাঝেই বিজেপির অন্যতম পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন ছুটে গিয়েছিলেন শোভনের বাড়িতে। দু-পক্ষের দড়ি টানানাটানির মাঝে শোভনের অবস্থান নিয়ে ঘোর ধন্দ তৈরি হয়েছিল।
করোনা পরিস্থিতি কেটে যাক- সব মুখোশ খুলে দেব
শোভনের কথায়, করোনা পরিস্থিতি কেটে যাক- সব মুখোশ টেনে এনে সব কিছু বুঝিয়ে দেব। তবে তিনি সাফ জানিয়েছেন, বিজেপি দলের সঙ্গে আমার কোনও বৈঠক হয়নি, বৈঠক হয়েছে একান্তই ব্যক্তিগত পর্যায়ে। সৌজন্য সাক্ষাৎকার ছিল এটা। অরবিন্দ মেনন রাজ্যে এলেই আমার বাড়িতে আসেন। আগেও বহুবার এসেছেন। সেদিনও আসেন। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।