শোভনের অন্ধকার শেষ অবধি ঘুচল না ‘সমুদ্র-মন্থনে’ও! তৃণমূল-বিজেপির দড়ি টানাটানিতে পর্বতের মুষিকপ্রসব
শোভনের অন্ধকার ঘুচল না ‘সমুদ্র-মন্থনে’ও! তৃণমূল-বিজেপির দড়ি টানাটানিতে পর্বতের মুষিকপ্রসব
ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখনও অন্ধকারেই ডুবে থাকল। কোন পথে যাবেন শোভন, যে পথে যাবেন, সেখানেই বাধা। সেই কারণেই প্রায় দু-বছর অন্তরালে কেটে গেল তাঁর। অজ্ঞাতবাস আর শেষ হয়েও হচ্ছে না। মাথায় খাঁড়ার বোঝা নিয়ে তিনি নিষ্ক্রিয়ই রইলেন বুধবারও।
সমুদ্র-মন্থনে পর্বতের মুষিক প্রসব
সম্প্রতি জল্পনা শুরু হয়েছিল, বিজেপিতে একবছরের অজ্ঞাতবাস কাটানোর পর এবার হয়তো তৃণমূলে ফিরবেন শোভন। কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের জল্পনায় জল ঢেলে দেল অরবিন্দ মেনন। তিনি তৎপর হয়ে শোভনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। আড়াই ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠকেও কোনও ফল মিলল না। সমুদ্র-মন্থনে পর্বতের মুষিক প্রসব হল।
আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পরও অন্তরাল সরল না
সোমবার রাতে শোভনের সঙ্গে বিজেপির অন্যতম পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করলেন। তারপর ফোনে কথা বলালেন প্রধান পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে। তারপর আশা করে গিয়েছিল এবার হয়তো সক্রিয় হবেন শোভন। কিন্তু কোথায় কী! তিনি রইলেন অন্তরালেই। বিজেপিতেও সক্রিয় হলেন না তিনি।
মুক্ত বাতাসে এসেও ডাল-ভাতে আনন্দ মাটি
তৃণমূলের ব্রাত্য হওয়ার পর ৯ মাস অজ্ঞাতবাসে কাটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। মুক্ত বাতাসে আসতে পেরে খুশিতে উৎফুল্ল হয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। কিন্তু দুদিনেই সেই আনন্দ মাটি হয়ে গেল দিলীপ ঘোষের ডাল-ভাত তত্ত্বে। আমন্ত্রণের চিঠিতে বৈশাখীর নাম না থাকা নিয়ে শোভন-বৈশাখীকে এক ও অভিন্ন বোঝাতে ডাল-ভাতের উদাহরণ দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ
দিদির হাতে ভাইফোঁটার পরও মেলেনি ছাড়পত্র
তারপর থেকে বিজেপির উপর গোঁসা করে শোভন যে ঢুকেছেন অজ্ঞাসবাসে, তা এক বছর অতিক্রান্ত। তিনি বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে যাননি। যাননি অমিত শাহ-জেপি নাড্ডাদের সভাতেও। বরং তাঁর তৃণমূল সখ্যতা বেড়েছিল। তিনি ছুটে গিয়েছিলেন দিদির হাতে ভাইফোঁটা নিতে। তারপরও তিনি তৃণমূলে যোগ দেননি।
একাধিক বৈঠকেও জট কাটেনি শোভনের ঘরওয়াপসির
তবে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর ও বৈশাখীর যোগাযোগ ছিল সর্বদাই। চলচ্চিত্র উৎসেবর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মঞ্চে তখন প্রথন সারিতেই বসেছিলেন শোভন-বৈশাখী। তারপর একাধিকবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়, এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী। কিন্তু জট কাটেনি।
স্ত্রী রত্না না বান্ধবী বৈশাখী, শোভনের পথে কাঁটা
সেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের কচকচানিতে শোভনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই রয়ে গিয়েছে। শোভনের হয়ে বান্ধবী বৈশাখী জানিয়ে দিয়েছিলেন, রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক মঞ্চে রাজনীতি করবেন না, তা তৃণমূলের শীর্ষ মহলে জানিয়েই দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাই তৃণমূলের যোগদান কোথায় আটকে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
হঠাৎ জল্পনা শুরু শোভনকে নিয়ে, মিলিয়ে গেল অচিরেই
এরই মাঝে সোমবার সকাল থেকে শোভনের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে খবর রটে যায়। তারপর থেকেই শোভনকে নিয়ে জল্পনার পারদ চড়ে। রাজনৈতির মহলের ধারণা ছিল, শোভনকে ফেরাতেই তৃণমূলের হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শোভনের ঘরওয়াপসিতে দাঁড়ি, অন্ধকারে ভবিষ্যৎ
শোভনের তৃণমূলে ফেরার জল্পনার মধ্যেই সোমবার রাতে তাঁর বাড়িতে যান বিজেপির পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। তিনি আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁকে সক্রিয় হওয়ার বার্তা দেন। অরবিন্দ মেননের এই শোভনের বাড়িতে যাওয়া ভালো চোখে নেয়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই আবারও দাঁড়ি পড়ে যায় শোভনের ঘরওয়াপসির সম্ভাবনায়। শোভনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারেই রয়ে গেল।
বিধি মেনে মেট্রো,লোকাল চালানোয় সায়! শর্তে করোনা হটস্পট ৬ শহরে বিমান চালানোয় মত মমতার