রাত পোহালেই সিঙ্গুরে জমি ফেরত উৎসব, উদ্দীপনার পারদ তুঙ্গে
সিঙ্গুর, ১৩ সেপ্টেম্বর : ২০০৬ সালে বাম সরকার অবৈধভাবে জমি কেড়ে নিয়েছিল। ২০১৬-য় সেই জমি ফিরিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার। জমি ফেরতের আনন্দে মাতোয়ারা গোটা সিঙ্গুর। বুধবার সিঙ্গুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নিজের হাতে কৃষকদের হাতে তুলে দেবেন জমির পরচা, ক্ষতিপূরণের চেকও। ফলে সাজ সাজ রব গোটা সিঙ্গুর জুড়ে। [ সিঙ্গুর রায় নিয়ে কোন রাজনৈতিক দল কী বলছে!]
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক কৃষকদের ঐতিহাসিক জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে বুধবার পালন করা হবে সিঙ্গুর দিবস৷ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে তাই সেজে উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চ৷ বিডিও অফিসেও কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়৷ মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছেন ৯১১৭ জনকে পরচা দেওয়া হবে। ৮০০ জনকে দেওয়া হবে সুদ ছাড়া ক্ষতিপূরণের চেক। [সিঙ্গুর ইস্যু : ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনকে ঢাল করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার সিপিএমের]

সেইসঙ্গে বার্তা দেওয়া হয়েছে টাটাকেও। অবিলম্বে শেড সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে ওই সংস্থাকে। সাতদিনের সময়সীমা ধার্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, অন্যথায় প্রশাসনের তরফ থেকেই শেড খুলে দেওয়া হবে। পরে তা হস্তান্তর করা হবে টাটাদের। অর্থাৎ কোনওমতেই বিলম্ব নয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুরো ৯৯৭ একরের জরিপের কাজ শেষ করতে হবে। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ৬২০ একর জমি জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৩৭৭ একর জমি জরিপের কাজ শেষ করতে বাধা ওই শেড ও কতকগুলি নির্মাণ। ওই অংশে কয়েকটি পুকুরও রয়েছে। এখন সেগুলি চাষযোগ্য জমির রূপ দিতে হবে শুধু। [সিঙ্গুরের রায়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বললেন]
এদিন থেকেই যান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। কলকাতামুখী রাস্তা দিয়ে চলছে দু'দিকের যান৷ সিঙ্গুরমুখী লেন পুরো বন্ধ। এক্সপ্রেসওয়ের উপরই লোহার খাঁচা আর শক্ত কাঠের তক্তা দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে ৬০ ফুট চওড়া ও ৮০ ফুট লম্বা মূল মঞ্চ৷ শালকাঠের খুঁটি আর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে লম্বা ব্যারিকেড৷ মাইক, আলোরও বন্দোবস্ত তো আছেই। সব মিলিয়ে সিঙ্গুরে দুর্গোৎসবের আগেই মহোৎসব ঘিরে উদ্দীপনা তুঙ্গে। [সিঙ্গুর নিয়ে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের, আবেগে ভাসল টুইটার]
নিরাপত্তাও আঁটোসাঁটো। সভামঞ্চ ও তার চারপাশে থাকছে সিসি ক্যামেরা৷ মোতায়েন করা হচ্ছে ৪ হাজার পুলিশকর্মী৷ থাকছে দমকল ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরাও৷ এতকিছুর মধ্যেও থেমে নেই টাটাদের প্রকল্প এলাকায় জমি জরিপের কাজ। একশো দিনের শ্রমিককে কাজে লাগিয়ে সাফ করে ফেলা হয়েছে প্রায় পুরো জায়গাটাই। বিডিও অফিসে অনিচ্ছুকদের আবেদনপত্র জমা নেওয়ার ভিড় অব্যাহত।