মোর্চাকে গোর্খাল্যান্ডের ইন্ধন দিচ্ছে সিকিম, জবাব দিতে সংঘাতের পথে রাজ্য
বিতর্কের সূত্রপাত গ্রেফতার হওয়া ছয় মোর্চা সমর্থককে ছাড়া নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া্র আবেদন জানানো সত্ত্বেও সিকিম তাঁদের দাবিতে অনড় থেকেছে।
মোর্চাকে নিয়ে সিকিম সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের পথে রাজ্য। সিকিম সরকার কালিম্পংয়ের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছিল। সেই অভিযোগকে খারিজ করে রাজ্য প্রশাসনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উল্টে সিকিম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে সিকিম, তাদের আশ্রয়ও দিয়েছে।
বিতর্কের সূত্রপাত গ্রেফতার হওয়া ছয় মোর্চা সমর্থককে ছাড়া নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া্র আবেদন জানানো সত্ত্বেও সিকিম তাঁদের দাবিতে অনড় থেকেছে। ধৃতদের আদালতের নির্দেশ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে দেওয়া যাবে না বলে জানায় সিকিম। এখন গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে আসার গল্প ফাঁদা হচ্ছে নতুন করে।
সেইমতোই গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে শনিবার সিকিমে হাজির পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এদিনই তা আদালতে পেশ করা হবে। তারপরই চূড়ান্ত হবে ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসা যাবে কি না। রাজ্য প্রশাসনের অভিযোগ, সিকিম সরকার আসলে চেষ্টা করছে ধৃতদের যেভাবে হোক পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে প্রত্যার্পণ না করতে। এখন অবশ্য পুরোটাই আদালতের উপর নির্ভরশীল।
এরই মধ্যে উঠে পড়েছে আরও একটি প্রশ্ন। কেন কালিম্পংয়ের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে দেহ ময়নাতদন্তের আগেই খুনের অভিযোগ দায়ের করা হল? ওই ব্যক্তি কার গুলিতে মারা গিয়েছে, তা নিয়ে কোনও তদন্ত ছাড়াই সিকিম সরকার কী করে জানল কালিম্পং পুলিশ সুপারের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই মোর্চা নেতার?
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তাঁরা সিকিম পুলিশের অনুমতি না নিয়েই এ রাজ্যে ঢুকে অভিযান চালিয়েছে। যদিও এই অভিযোগ সরাসরি খণ্ডন করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। পুলিশের দাবি, তাঁরা নিয়ম মেনেই অভিযান চালিয়েছে। সিকিম পুলিশের অনুমতি নিয়েই তাঁরা অভিযান চালায় মোর্চার ডেরায়। প্রথমে কোনও গুলি চালানো হয়নি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে। বরং পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে মোর্চার গোপন ডেরা থেকে গুলি উড়ে আসে পুলিশকে লক্ষ করে।
রাজ্য সরকার পাল্টা দিয়েছে, ইউএপিএ ধারায় অভিযুক্তকে আশ্রয় দিয়েছ সিকিম সরকার। সিকিমের এক প্রভাবশালী নেতার রিসর্টেই বৈঠকে বসেছিলেন গুরুং-রোশনরা। সিকিম সরকারেরও মদত রয়েছে এই বৈঠকে। তাঁরাও মোর্চাকে ইন্ধন দিচ্ছে পৃথক রাজ্যের দাবিতে। রাজ্যের তরফ থেকে তাই সিকিম সরকারকে চিঠি লেখা হয়, এ রাজ্যের অপরাধীদের যেন কোনওভাবেই ও রাজ্যে আশ্রয় দেওয়া না হয়।