সিদ্ধার্থশঙ্করের সমর্থনে বাদ দেওয়া 'অ্যাপেনডিক্স' ফেরাচ্ছেন মমতা, আর্থিক সংকটে উদ্যোগ আর খরচ নিয়ে প্রশ্ন
ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। ইতিমধ্যেই রাজ্যে বিধান পরিষদ ( ligislative council) গঠনের প্রস্তাবে শিলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। সব কিছু ঠিকঠাক
ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। ইতিমধ্যেই রাজ্যে বিধান পরিষদ ( ligislative council) গঠনের প্রস্তাবে শিলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ৫০ বছরের বেশি সময় পরে রাজ্যে ফিরতে চলেছে বিধান পরিষদ। ১৯৬৯ সালে যুক্তফ্রন্টের সময়ে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই এই বিধান পরিষদ অবলুপ্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় (siddhartha shankar roy) এবং আরএসপি নেতা যতীন চক্রবর্তী।
১৯৬৯ সালে বিধান পরিষদের অবলুপ্তি
স্বাধীনতার পরে রাজ্যে বিধান পরিষদ তৈরি হলেও, ১৯৬৯ সালে তার অবলুপ্তি হয়। ১৯৬৯ সালে বিধানসভার সর্বসম্মতি প্রস্তাবে বিধান পরিষদ অবলুপ্তি করা হয়েছিল। বিধানসভায় কংগ্রেস ও যুক্তফ্রন্টের ২২২ জন সদস্যই সর্বসম্মতিতে বিধান পরিষদ অবলুপ্তিতে মত দিয়েছিলেন। দেশে বর্তমানে উত্তর প্রদেশ, বিহার, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, জম্মু-কাশ্মীর এবং অন্ধ্রপ্রদেশে এই মুহূর্তে বিধান পরিষদ রয়েছে।
যতীন চক্রবর্তীর প্রস্তাবে সমর্থন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা বিধান পরিষদ অবলুপ্তির প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন আরএসপির যতীন চক্রবর্তী। তিনি বিধান পরিষদকে অপ্রয়োজনীয় অযোক্তিক এবং ব্যয়বহুল বিলাসিতা বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে যুক্তফ্রন্তের নির্বাচনী ইস্তেহারে বিধান পরিষদ অবলুপ্তির বিষয়টি ছিল। বিধানসভায় প্রস্তাব সমর্থন করেছিলেন কংগ্রেস নেতা সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ও। তিনি বলেছিলেন, যতীনবাবু বিধান পরিষদ নামে অ্যাপেনডিক্স অপারেশনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেই অপারেশনে দক্ষ সার্জনের সহকারীর ভূমিকা তিনি পালন করতে চান।
দেখা গিয়েছিল, ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৫ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ৪৩৬ টি বিল পাশ হয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র দুটি বিল বিধান পরিষদে সংশোধন করা হয়েছিল।
বিধান পরিষদ গঠনে বামেদের বিরোধিতা
শুধু এইবারেই নয়, তৃণমূণ আগেও বিধান পরিষদ গঠনের চেষ্টা করেছে। বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব বিধানসভায় পেশ হয়েছিল আগের বারেই। সেই সময় বাম সদস্যরা বিধান পরিষদ গঠনের বিরোধিতা করেছিলেন। বিধান পরিষদ গঠনের বিরোধিতা করেছিল এসইউসিও। জবাবে তৃণমূল বলেছিল, পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের রায় তাদের সঙ্গে রয়েছে, তাই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করতে তারা দায়বদ্ধ।
বাড়তি খরচ, গণতন্ত্রের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর
যাঁরা এই বিধান পরিষদ গঠনের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের মতে বর্তমান আর্থিক সংকটের সময়ে বিধান পরিষদ গঠন আর্থিক বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়াও তা গণতন্ত্রের পক্ষে অস্বাস্থ্য করও বটে। নির্বাচনের সময় একটি বিশেষদলকে সমর্থনের পুরস্কার হিসেবে বিধান পরিষদের স্থান পাওয়ার ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে অস্বাস্থ্যকর। স্বাধীন ভারতে, বাংলায় দেখা গিয়েছে, যেসব মানুষের প্রভাব প্রতিপত্তি আছে, তাঁদেরকেই বিধান পরিষদের সদস্য করা হয়েছিল।
তথ্য ঋণ: বিশ্বনাথ চক্রবর্তী