মতুয়াদের ঝুলি শূন্যই থেকেছে বিজেপিতে এসে, নাগরিকত্বই এখন মাথাব্যথার কারণ শান্তনুর
মতুয়াদের ঝুলি শূন্যই থেকেছে বিজেপিতে এসে, নাগরিকত্বই এখন মাথাব্যথার কারণ শান্তনুর
শান্তনু ঠাকুরের এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে সিএএ। মতুয়াদের সিএএ চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতেছিলেন। ২০২১-এও বিধানসভা ভোটে সিএএ তাস খেলেছিলেন শান্তনু ঠাকুররা। এখন বিজেপি সিএএ নিয়ে চুপচাপ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মতুয়া নেতারা। তারা এখন রাজ্য বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে পরিস্থিতি সামলাতে চাইছে।
২০১৯ ও ২০২১০এর নির্বাচনে সিএএ-টোপ দিয়ে মতুয়াদের নিজেদের পালে টেনেছিল বিজেপি। কিন্তু মতুয়ারা বিজেপিকে সমর্থন করেও কিছুই পায়নি। তাই মতুয়াদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে বারবার সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বেসুরো বেজেছেন। তারই ফলপ্রসূতে তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও মতুয়াদের ঝুলি শূন্যই থেকে গিয়েছে।
মতুয়ারা বিজেপির দিকে থেকে সরে যেতে শুরু করায় এখন বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছেন মতুয়া নেতারা। বিজেপির রাজ্য সংগঠনে কোনও মতুয়া প্রতিনিধি না থাকায় মতুয়া বিধায়করা ক্ষুব্ধ। পাঁচজন মতুয়া বিধায়ক বিজেপির হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে প্রতিবাদ জানান। তারপর প্রতিবাদী হন স্বয়ং শান্তনু ঠাকুর। তিনি, বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপির সমান্তরাল সংগঠন গড়ে তোলার হুমকি পর্যন্ত দেন।
বিজেপিতে বিদ্রোহী শান্তনুর নয়া পদক্ষেপ, ঠাকুরনগরে মতুয়া বৈঠকে বাড়ল আরও জল্পনা
কিন্তু তাতেও কি মতুয়াদের মান ভাঙবে। তারা চাইছেন নাগরিকত্ব। তা নিয়েই এদিন মূলত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন শান্তনু ঠাকুর। সিএএ চালুর মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও বার্তা আসেনি। তাই মতুয়ারা ঠিক করেছেন তাঁরা আন্দোলনের পথে হাঁটবেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে তারা দরবার করবেন বলে ঠিক করেছেন মতুয়ারা। শান্তনু ঠাকুরের সভাপতিত্বে এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিন বিজেপি বিধায়ক। ছিলেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্যরাও। শান্তনু ঠাকুর জানান, মতুয়াদের সংগঠনের বিস্তার নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। তবে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা স্পষ্ট করে দেন সিএএ প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। প্রয়োজনে আন্দোলনের পথে হাঁটবেন বলেও জানান তাঁরা।
মতুয়া মহাসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দ্রনাথ গায়েন সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, শুধু ভোটের সময় মতুয়াদের ব্যবহার করা হয়। মতুয়ারা তাই আর কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে না। মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর তারপর বিজেপিতে বিদ্রোহী হয়ে উঠলেও মতুয়াদের সামলানোর মতো কোনও অস্ত্র তাঁর কাছে ছিল না।
মতুয়াদের তৃণমূল মুখ মমতাবালা ঠাকুর তো সরাসরি দাবি করেন, বিজেপি মতুয়াদের ভুল বুঝিয়েছিলেন। মতুয়ারা এখন তাঁদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাই তাঁরা তৃণমূলের ফিরে আসছেন। বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে মতুয়া-গড়ে। শান্তনু ঠাকুররা তাই এখনও সিএএ নিয়ে ভুল বুঝিয়ে মানুষকে আটকে রাখার চেষ্টা করছে।