আদিবাসী সমাজের 'নিদান'! ঝাড়গ্রামের তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে বিতর্ক
আদিবাসী সমাজের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী, পেশায় শিক্ষিকা বীরবাহা সরেন ( টুডু) কে তৃণমূল কংগ্রেস ঝাড়গ্রাম আসনে প্রার্থী করায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে আদিবাসী সমাজে।
আদিবাসী সমাজের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী , পেশায় শিক্ষিকা বীরবাহা সরেন ( টুডু) কে তৃণমূল কংগ্রেস ঝাড়গ্রাম আসনে প্রার্থী করায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে আদিবাসী সমাজে। আদিবাসী সমাজের নেতারা এখন দ্বিধা বিভক্ত। তাদের এক দল চাইছে বীরবাহা যেন আদিবাসী সমাজের রীতি মেনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গ ত্যাগ করেন। তা না হলে আদিবাসী পরগণা মহলের নেতা রবিন টুডুকে পদত্যাগ করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস দলের প্রার্থী হওয়া নিয়ে আদিবাসী সমাজে যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে তাকে পুঁজি করে এই আসনে জেতার সম্ভাবনা দেখছে বিজেপি , সিপিএম সহ অন্যরা।
গত লোকসভা নির্বাচনে এই আসনে ৬, ৭৪, ৫৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তৃণমূল কংগ্রেসের উমা সরেন। ৩, ৪৭, ৮৮৩ ভোটে জয়ী হন তিনি। সিপিএম প্রার্থী পুলিন বিহারী বাস্কে পান ৩, ২৬, ৬২১ টি ভোট আর বিজেপির বিকাশ মুদি পান ১, ২২, ৪৫৯ টি ভোট।
এই বার উমা সরেনকে প্রার্থী না করে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে বীরবাহা সরেনকে। এই কেন্দ্রে এবার সিপিএম প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী দেবলীনা হেমব্রম। আর বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে খড়্গপুর আইআইটির প্রাক্তনী কুনার হেমব্রম কে। ঝাড়গ্রাম থেকে তাদের হয়ে আদিবাসী সিনেমার অভিনেত্রী বীরবাহা হাঁসদা লড়বেন বলে জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ড পার্টি ( নরেন) দলের নেতা চুনিবালা হাঁসদা।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই এলাকায় ভালো ফল করেছিল বিজেপি। জেলা পরিষদের তিনটি আসনে জেতার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে ও পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কিছু আসনে জয়ী হয়। এবার এই আসনে জেতার স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। এই কেন্দ্রে বিজেপি জিতবে। তাদের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আস্থা বেড়েছে। তার ওপর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী নিয়ে ওদের নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল বাড়ছে। সব মিলিয়ে তাদের জেতার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, দাবি বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর।
দেবলীনা হেমব্রম বাঁকুড়া জেলার রাণীবাঁধ কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক। তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের আগ্রহ কমছে। সাধারণ মানুষ তাদের ও বিজেপিকে আর বিশ্বাস করতে পারছে না। তিনি সব মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সমর্থন চাইবেন।
এদিকে আদিবাসী সমাজের নেতারা বৈঠক করে প্রকাশ্যে রবিন টুডু ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তাদের দাবি, আদিবাসী সমাজের নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন তারা। আর এখন সেই আন্দোলন থামানোর জন্য বীর বাহা টুডুকে প্রার্থী করা হয়েছে। তাদের দাবি, আদিবাসী সমাজের নেতা রবিন টুডু পদত্যাগ করলেও তাদের সামাজিক অনুশাসনে তার স্ত্রী রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়তে পারবেন না।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুকুমার হাঁসদার দাবি, গত বারের চেয়ে অনেক বেশি ভোটে জয়ী হবেন বীরবাহা সরেন।