স্ত্রীকে খুন করে ২২ টি টুকরো করায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড
স্ত্রীকে খুন করে ২২ টি টুকরো করায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড
স্ত্রীকে খুন করে ২২ টি টুকরো করার পর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা। অভিযুক্ত মহিদুর আলম নামের ঐ শিক্ষক এবং তার মা ও দিদিকে খুনের চেষ্টার ঘটনার ১৪ বছর পর দোষী শিক্ষক মহিদুর আলমের সাজা ঘোষণা করল আদালত। সাজায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিল উত্তর দিনাজপুর জেলা আদালত। সাজা ঘোষনার পর খুশী মৃতার স্ত্রীর পরিবারের লোকেরা।
রায়গঞ্জের সরকারী স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগের সাজা শোনার জন্য রায়গঞ্জ জেলা আদালতে মানুষের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার থানার কেউটালের বাসিন্দা রায়গঞ্জের শিক্ষক এবং রায়গঞ্জ কলেজের পার্ট টাইম লেকচারার মহিদুর আলমের সাথে ঐ কলেজেরই ছাত্রী কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা সাবিনা খাতুনের ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয় । তাঁরা দুইজনে পালিয়ে বিয়েও করেন। বিয়ের পর তাঁরা রায়গঞ্জ করোনেশন স্কুলের পাশে একটি বাড়ি ভাড়া থাকতেন।
অভিযোগ বিয়ের কিছুদিন পরেই ২০০৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বাপের বাড়ি কালিয়াগঞ্জ যাওয়ার নাম করে বেড়িয়ে নিখোঁজ হয়ে যান সাবিনা বেগম। এরপর পরিবারের লোকেরা ২০০৫ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর কালিয়াগঞ্জ থানায় মিসিং ডায়েরি করে । কিছুদিন পর সাবিনা বেগমের দেহের বিভিন্ন অংশ রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযোগ, স্ত্রী সাবিনা বেগমকে খুন করে ২২ টি টুকরো করে প্রমাণ লোপাটের করার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক মহিদুর আলম ত্রিশ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে দেয় । তার এই নৃশংস হত্যাকান্ডের জন্য সাহায্য করে তার মা মইয়ম বেগম ও তার বোন নূর নেহা বেগম। কালিয়াগঞ্জের কালুপুকুরের জলে একটি মাথা উদ্ধার হয়।
এরপর ধীরে ধীরে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাবিনার শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই ঐ দেহের টুকরো অংশগুলি জলপাইগুড়ি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
তদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃতদেহ সনাক্ত করার পরই অভিযুক্ত শিক্ষক মহিদুর আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ ধৃতের বিরুদ্ধে ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে। ১৪ বছর ধরে এই মামলা চলার পর আজ বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার ফার্স্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় আদালতের বিচারক বিনয় কুমার প্রসাদ অভিযুক্ত শিক্ষক মহিদুর আলম, নইয়ম বেগম, ও নূর নেহা বেগম বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানার সাজা ঘোষনা করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক মহিদুর বলেন তার প্রতি অন্যায় বিচার হয়েছে।