সারদা-কাণ্ডে রজতকে গ্রেফতারের পর সৃঞ্জয় বসুকেও জেরা সিবিআইয়ের
আরও পড়ুন: ডেলোতে মমতা-সুদীপ্ত গোপন বৈঠক নিয়েও তদন্ত হবে, জানাল সিবিআই
সৃঞ্জয় বসু শুধু তৃণমূল সাংসদই নন, 'সংবাদ প্রতিদিন' পত্রিকার সম্পাদক। ২০১০ সালের জুন মাসে সারদা গোষ্ঠী মিডিয়া ব্যবসায় নামে। তার পরই 'সংবাদ প্রতিদিন'-এর তৎকালীন সহযোগী সম্পাদক কুণাল ঘোষের মধ্যস্থতায় সুদীপ্ত সেন সৃঞ্জয় বসুর সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। বলা ভালো, সুদীপ্তবাবুকে চাপ দিয়ে চুক্তি করতে বাধ্য করা হয়। তদনুযায়ী ঠিক হয়, সারদা গোষ্ঠী পরিচালিত খবরের কাগজ ও টিভি চ্যানেলগুলিকে 'সম্পাদকীয় সহায়তা' (এডিটোরিয়াল সাপোর্ট) দেবে সৃঞ্জয় বসুর পত্রিকা। সেই বাবদ মাসে মাসে সুদীপ্ত সেনকে দিতে হবে মোটা টাকা। এ ছাড়াও নানা সময়ে সৃঞ্জয় বসু সারদা গোষ্ঠীর কাছ থেকে 'ব্যবসায়িক' কারণে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১৩ সালের এপ্রিলে যখন সারদা গোষ্ঠী ডোবে, তখন সুদীপ্ত সেন সিবিআইকে চিঠি লিখে কয়েকজনকে দুষেছিলেন। তাতে নাম ছিল সৃঞ্জয় বসুর।
ঝোলা থেকে একটা বেড়াল বেরিয়েছে। বহু বেড়াল এখনও দিদির ঝোলায়", কটাক্ষ অধীরের
সারদা গোষ্ঠীর কারবার নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, "কুণাল চোর? মদন চোর? টুম্পাই চোর? মুকুল চোর? আমি চোর? আর তোমরা সব সাধু?" ইত্যাদি। অর্থাৎ সেই সময় কুণাল ঘোষের পাশাপাশি টুম্পাই বা সৃঞ্জয় বসুকেও ক্লিনচিট দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে রাজ্য সরকারের পুলিশই সারদা মামলায় গ্রেফতার করেছিল কুণাল ঘোষকে। আর এ বার সৃঞ্জয় বসুর ওপর নজর পড়েছে সিবিআইয়ের। সুদীপ্ত সেন তাঁর চিঠিতে সৃঞ্জয় বসুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছিলেন, তা কতটা সত্য, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা দেবব্রত সরকার, ব্যবসায়ী সন্ধির আগরওয়ালকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গতকাল সন্ধেবেলা গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা প্রাক্তন আইপিএস রজত মজুমদারকে। আর আজ শাসক দলের রাজ্যসভার সাংসদ সৃঞ্জয় বসুকে ম্যারাথন জেরা করল সিবিআই। মোহনবাগান ক্লাবের অন্যতম মাথা হিসাবেও পরিচিত সৃঞ্জয় বসু। সিবিআই সূত্রে খবর, কুণাল ঘোষের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে সৃঞ্জয় বসুকে। এ দিন সৃঞ্জয়বাবু ছাড়াও আর এক তৃণমূল নেতা সমীর চক্রবর্তী ওরফে বুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তিনি বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর স্বামী।
রজত মজুমদারের গ্রেফতারের পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, "ঝোলা থেকে সবে একটা বেড়াল বেরিয়েছে। বহু বেড়াল এখনও দিদির ঝোলায়।" স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, রাঘববোয়ালদের দিকে নির্দেশ করেছেন তিনি।