শিশুর শরীরে সূচ ফুটিয়ে তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধিলাভ! স্বীকারোক্তিতে কী জানাল সনাতন
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সূচকাণ্ডে ধৃত সনাতন বয়ান বদল করে চলেছে। এবার তার চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধিলাভের জন্যই সূচ ফুটিয়েছিল সে।
অবশেষে শিশুর শরীরে সূচ ফোটানোর কথা স্বীকার করল অভিযুক্ত সনাতন ঠাকুর। দীর্ঘ জেরার পর পুলিশের কাছে সনাতন তার দোষ কবুল করল। পুলিশকে সে জানিয়েছে, তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধিলাভ করার জন্যই শিশুর শরীরের সূচ ঢুকিয়েছিল। সনাতন নাকি সপ্নাদেশ পেয়েছিল- সূচ ঢোকানোর পর শিশুর আর্তনাদেই সিদ্ধিলাভ হবে তার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শিশুটির শরীরে অস্ত্রোপচার করে সাতটি সূচ বের করা হয়। এসএসকেএমের চিকিৎসকরা চেষ্টা চালিয়েও অবশ্য শেষরক্ষা করতে পারেননি। পৌনে চার ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচার শেষ হলেও পরের দিনই তার মৃত্যু হয়। সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় চিকিৎসকদের। এরপরই পুলিশ অভিযুক্ত সনাতনের খোঁজে নামে।
উত্তরপ্রদেশে গা ঢাকা দেওয়া সনাতনকে জালে পুরলেও সূচ ফোটানোর কথা কিছুতেই এতদিন স্বীকার করছিল না সে। পুরুলিয়ার সূচকাণ্ডে এতদিন নানা গল্প ফেঁদেছে ধৃত সনাতন। কখনও দায়ী করেছে নিজের ছেলে-বউকে, কখনও শিশুটির বাবা কিংবা মামাকে। এভাবেই পুলিশের তদন্ত ভিন্নপথে চালিত করার চেষ্টা করে গিয়েছে সনাতন।
তবে পুলিশি জেরার মুখে শেষপর্যন্ত ভেঙে পড়ে সনাতন। এতদিন নানা গল্প ফাঁদার পর সনাতন জানায়, সে-ই শিশুটির শরীরে সূচ ফুটিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধিলাভ করার বাসনাতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। তার এই কু-কর্মে শিশুটির মা মঙ্গলা তাকে সাহায্য করেছিল বলেও জানায় সনাতন। এর পর সনাতন ও মঙ্গলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি আরও জোরদার করেছে পুরুলিয়াবাসী।
এদিকে জেলাশাসক এদিন শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের কাছে সূচকাণ্ডে রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেখানে জেলাশাসক উল্লেখ করেন, আর্থিক কারণেই ৪২ বছরের বড় সনাতনকে বিয়ে করেছিল মঙ্গলা। তার আগে ১৫ বয়সে তার বিয়ে হয়েছিল। ১৭ বয়সে তার সন্তান হয়। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বাড়ি ছাড়ে সে। এরপর সনাতনের বাড়িতেই সে আশ্রয় নিয়েছিল। শিশুটির শরীরে সূচ ফুটিয়ে অত্যাচারের সময়ও কোনও প্রতিবাদ করেনি মঙ্গলা।