এক ফোনেই বরফ গলল! সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দিতেই সুজিতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘মধুর’
দীর্ঘদিন উভয়েই একই রাজনৈতিক দল করেছে। উভয়েই একই জায়গায় রাজনীতি করেছেন। তবু উভয়ের সম্পর্ক ছিল তিক্ততায় ভরা। কবে তাঁদের কথা হয়েছে বা বার্তা বিনিময় হয়েছে, তা মনে করতে পারছেন কেউই- না সব্যসাচী, না সুজিত। সেই বরফ জল হল এতদিনে। সব্যসাচীর ফোন থেকে এল বিশেষ বার্তা।

ফোনে বার্তা এল ‘গেট ওয়েল সুন’
করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ঘরবন্দি তৃণমূলের মন্ত্রী সুজিত বসু। হঠাৎ ফোনে বার্তা এল ‘গেট ওয়েল সুন'। চমকে ওঠার জোগাড়। এ কার ফোন! যিনি ফোনের অপরপ্রান্তে ছিলেন তিনি আর কেউ নন এতদিন ছিলেন তাঁরই সতীর্থ। সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। একদিন আগেই সম্পাদক হয়েছেন বিজেপির। সেই সব্যসাচীই শুভ কামনা জানালেন ‘প্রতিপক্ষ' সুজিতের।

কয়েক মিনিট ধরে দরুন আলাপচারিতা
এককালের সহকর্মী সব্যসাচীর সঙ্গে কয়েক মিনিট ধরে দরুন আলাপচারিতা হল সুজিতের। সব্যসাচী বিজেপি দফতরে বসেই প্রাক্তন সতীর্থের খোঁজ নিলেন। শরীর কেমন আছে জানতে চাইলেন। খোঁজা পাচ্ছিলেন নো করোনা আক্রান্ত সুজিত বসুর। মনটা ভালো ছিল না, দুশ্চিন্তা হচ্ছিল, তাই ফোন করে বসলেন সটান।

বরফও গলে জল, সম্পর্ক মধুর হল দুজনের
একই দলে থাকলেও সুজিত বসু ও সব্যসাচী দত্তের সম্পর্ক ভালো ছিল না। কথা প্রায় হতই না। সব্যসাচী বিজেপিতে যাওয়ার পর উভয়ের পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেমেছে, তাই আর বাধা নেই সম্পর্কের বরফ গলতে। বরফও গলে গেল অবশেষে। সম্পর্ক মধুর হল দুজনের। সৌজন্যের রাজনীতি একইসঙ্গে উচ্চমাত্রা পেল।

সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরই হল মধুর মিলন
তৃণমূলে থাকাকালীন সব্যসাচী ছিলেন বিধানগরের মেয়র, আর সুজিত বসু বিধানগররে বিধায়ক। পরে গুরুত্ব বাডিয়ে তিনি মন্ত্রী। আর সব্যসাচী গুরুত্ব হারিয়ে মেয়র পদ থেকে অপসারিত হয়ে এখন বিজেপিতে। যদিও তিনি এখনও রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তৃণমূলের টিকিটেই।

সৌজন্যের জোয়ারে উভয়ের সম্পর্ক ‘মধুর’ হল
২০১৫-য় সুজিত বসু ও কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে ছাপিয়ে সব্যসাচী বিধানগরের মেয়র হতেই সম্পর্কে ভাটা পড়ে। উভয়ের কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। রাজনৈতিক গোষ্ঠীকোন্দলে বারবার শিরোনামে আসেন দুজন। সব্যসাচী বিজেপিতে যাওয়ার পর সেই লড়াই শেষ। তাই এবার সৌজন্যের রাজনীতিতে জোয়ার লাগিয়ে উভয়ের সম্পর্ক ‘মধুর' হল।

কিন্তু কেন হঠাৎ সুজিতকে ফোন সব্যসাচীর?
একেবারে আসর জমিয়ে বসেছিলেন সব্যসাচী। সাংবাদিকদের নিয়ে বিজেপির দফতরে বসে তিনি ফোন করলেন তাঁর এককালের সতীর্থকে। সুজিত বসুর ফোন বেজে গেল। সব্যসাচী বললেন ফোনটা বেজে গেল, কেউ রিসিভ করেননি। কিন্তু কেন হঠাৎ ফোন? সব্যসাচী বললেন, ও মা, খোঁজ নেব না, দীর্ঘদিন একসঙ্গে রাজনীতি করেছি, করোনা সক্রমিত হয়ে কেমন আছেন!

তিন শব্দে শুভকামনা সুজিত বসুকে
সব্যসাচী বললেন- ফোনটা রিসিভড হয়নি, টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে দিয়েছি। গেট ওয়েল সুন- তিন শব্দে তিনি সুজিত বসুকে শুভকামনা জানিয়েছেন। এরপর তিনি নিজেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন ফোনটা ধরলেন না। বললেন, হয়তো বিশ্রাম নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার টিপ্পনি কাটলেন। পোন ধরবেন কী করে ট্যাপ করা আছে না। তাঁর ঘাডে কটা মাথা আছে যে বিজেপির রাজ্য সম্পাদকের ফোন ধরবেন!

সব্যসাচীকে মাস্টারস্ট্রোকটা দিলেন সুজিত বসুই
এরপর সব্যসাচীও ভাবতে পারেননি সুজিত বসু মাস্টারস্ট্রোকটা দেবেন। নানা কথার মাঝে্ই হঠাৎ বেজে উঠল সব্যসাচীর ফোন। সুজিত বসু রিং করেছেন। উভয়ের কথা হল বেশ খানিকক্ষণ। কুশল সংবাদ নিলেন। বউদি কেমন আছেন, জিজ্ঞাসা করলেন সব্যসাচী। এর মধ্যে সুজিত জানালেন তাঁর ছেলেও করোনা পজিটিভ। তবে কেউই গুরুতর অসুস্থ নন। বাড়িতেই আছেন। ভালোই আছেন। বালো আচেন সব্যসাচীও। তিনি একদিন আগেই বিজেপির সম্পাদক হয়েছেন, শুভেচ্ছা জানালেন সুজিতও। এভাবেই মধুরেণ সমাপয়েৎ হল আলাপচারিতার।

অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন পরীক্ষার সুপারিশ করেছে সিবিএসই ? আসল সত্যি জানুন