তৃণমূল তো ভাঙছেই, পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে কলেবর বৃদ্ধি হচ্ছে আরএসএস-এরও, জানাচ্ছে রিপোর্ট
দু'হাজার ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে চাপ কমার নয়, তা টের পাওয়া যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই।
দু'হাজার ঊনিশের লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে চাপ কমার নয়, তা টের পাওয়া যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। একে তো তাঁর তৃণমূল কংগ্রেস ভেঙে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছে, তার ওপর এবারে যোগ হল আরেকটি উদ্বেগজনক প্রবণতা।
এমাসের শুরুর দিকে 'দ্য প্রিন্ট'-এর একটি প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে এখন দলে দলে লোক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘতেও (আরএসএস) ভিড় জমাচ্ছে। এমনকী, সারা দেশের নিরিখে দেখলে উত্তরপ্রদেশের পরে পশ্চিমবঙ্গেই সবচেয়ে বেশি লোক অনলাইনে আরএসএস-এর সদস্যপদ নেওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছেন।
হু-হু করে বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গে আরএসএস সদস্য হওয়ার হিড়িক
দ্য প্রিন্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে যেখানে পশ্চিমবঙ্গে আরএসএস-এর সদস্যপদের জন্যে দরখাস্ত ছিল ৭,৪০০টি, ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯,০০০-এ এবং এই বছর জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্তই সেই সংখ্যাটি ৭,৭০০। একমাত্র উত্তরপ্রদেশ এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের থেকে এগিয়ে; সেখানে ১৫ জুন পর্যন্ত আরএসএস-এর সদষ্যপদের জন্যে দরখাস্ত পড়েছে ৯,৩৯২টি।
উত্তরপ্রদেশে এই প্রবণতার তাও না হয় কারণ ব্যাখ্যা করা কঠিন নয়। সেখানে আরএসএস-এর দফতর রয়েছে ছ'টি এবং গোবলয়ের রাজ্য হিসেবে সেখানে আরএসএস-এর উত্থান আশ্চর্জনক কিছু নয়। তাছাড়া, সেখানে গত দু'বছর যাবৎ বিজেপি রয়েছে ক্ষমতায় আর তাই আরএসএস-এর জনপ্রিয়তাবৃদ্ধিতে অবাক হওয়ার কারণ বিশেষ নেই।
সেদিক থেকে পশ্চিমবঙ্গে আরএসএস-এ যোগদানের উৎসাহ দেখে বিজেপিও চমৎকৃত। এই রাজ্যে আরএসএস-এর দফতরের সংখ্যাও মাত্র দু'টি কিন্তু তবুও যোগদানের উৎসাহে খামতি নেই।উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং দিল্লিতেও প্রচুর আবেদনপত্র পড়েছে বলে জানিয়েছেন আরএসএস-এর আধিকারিকরা।
উত্তরবঙ্গে রীতিমতো সক্রিয় এখন আরএসএস
দ্য প্রিন্ট জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গে আরএসএস-এর উপস্থিতি গত দুই দশক ধরে থাকলেও তা অক্রিয় হয়ে ওঠে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরেই। ওই অঞ্চলে আরএসএস-এর শাখার সংখ্যা এখন প্রায় ৫০০ বলে জানা গিয়েছে যা ২০১০-এর তুলনাতেও প্রায় তিনগুন বেশি। আর এই শাখার সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংসেবকদের সংখ্যাও বেড়েছে হু-হু করে। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের সংগঠন এখন অনেকটাই ধ্বস্ত এবং তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে সম্প্রতি মমতার ২১ জুলাই-এর প্রাঙ্গনে। উত্তরবঙ্গ থেকে ভিড় যথেষ্ট কম ছিল এবারে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
আরএসএসই বঙ্গে বিজেপিকে বাড়তে সাহায্য করছে?
যদিও আরএসএস-এর তরফে বলা হয়েছে যে তারা কোনওরকম রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয় না, বিজেপি বলেছে যে তৃণমূলস্তরে আরএসএস-এর বিস্তারিত কর্মসূচির জন্যেই বিজেপি রাজ্যে নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে পেরেছে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের প্রতি অবিচার কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা মানুষের জানতে আর বাকি নেই আর তাই এই প্রবণতা, আরএসএস-এর এক কর্তা জানায় 'দ্য প্রিন্ট'কে।