রয়্যাল বেঙ্গলের মাথার খুলি ফেটে চৌচির! ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অবাক তদন্তকারীরা
লালগড়ের জঙ্গলে বাঘবন্দি খেলা শেষ হয়েছে। শেষপর্যন্ত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার জীবন দিয়ে বন্ধ করেছে এই টানাপোড়েন। কিন্তু বাঘের এই রহস্যমৃত্যু রেখে দিয়ে গিয়েছে নানা প্রশ্ন।
লালগড়ের জঙ্গলে বাঘবন্দি খেলা শেষ হয়েছে। শেষপর্যন্ত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার জীবন দিয়ে বন্ধ করেছে এই টানাপোড়েন। কিন্তু বাঘের এই রহস্যমৃত্যু রেখে দিয়ে গিয়েছে নানা প্রশ্ন। বিশেষ করে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতেই ভিড় করেছে আরও প্রশ্ন। কী করে মৃত্যু হল বাঘের? কী করে বাঘটির মাথার খুলি খেটে চৌচির হয়ে গেল?
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তো উঠে পড়েছেই। প্রশ্ন উঠেও পড়েছে শিকারির লোভ লালসা নিয়েও। প্রশ্নে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের ভূমিকাও। বন দফতরের আধিকারিক-কর্মীরাও দায় এড়াতে পারেন না। এখন নয়া প্রশ্ন ময়না তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পর।
বাঘটির মাথার খুলি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে। চোয়ালে গুরুতর আঘাত। শরীরের একাধিক জায়গা ক্ষতবিক্ষত। এই রিপোর্টেই স্পষ্ট বাঘটির মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করা হয়েছে। আঘাত করা হয়েছিল চোয়ালেও। এদিনই এই ঘটনায় আহত দুই শিকারির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের ফলেই বাঘের মাথার খুলি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে-পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে বনকর্মীরা জানতে পারলেন না কোথায় বাঘ আছে, অথচ শিকারিরা জানতে পেরে গেল কী করে? শিকারিরা নিশ্চিত হয়ে গেল ওইখানে বাঘ আছে। আর শিকারিরা যে বারবার যাচ্ছে জঙ্গলে, তাও জানতে পারলেন না বনকর্মীরা।
দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে বাঘবন্দি খেলা চলছে। এই দেড় মাসের মধ্যে একটিবার ছাড়া বাঘবন্দি করার মতো পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারেনি বন দফতর। তখনই বাধ্য হয়ে আদিবাসী শিকারিদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন জঙ্গলে না যেতে।
ঘটনার দিন সকালেই দুজনকে আহত করে বাঘটি। ওই দুই ব্যক্তি যে জায়গায় আহত হয়েছিলেন, সেই জায়গা থেকে ১০০ মিটার দূরে বাঘটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই অবস্থায় একটা কথা স্পষ্ট বন আধিকারিকদের নিষেধ সত্ত্বেও শিকারিরা বনে যাচ্ছিলেন অবাধে।
তাহলে কেন বন দফতরের তরফে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হল না? দেড়মাস পর পশ্চিম মেদিনীপুরের বাগঘড়ার জঙ্গলেই মিলল বাঘ। কেনই বা এতদিন তাঁর কোনও সন্ধান করতে পারল না বন দফতর? বন দফতর বাঘটির দেখা না পেলেও শিকারিরা কী করে একাধিকবার তার দেখা পেয়ে গেল? এ প্রশ্নের জবাব চাইছে পশুপ্রেমীরা।