রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত বসন্ত উৎসব নিয়ে মুখ খুললেন রোদ্দুর রায়, ফের শুরু বিতর্ক
শেষ হতে চলেছে পাতা ঝরা বসন্ত। সোম ও মঙ্গল দুদিন বসন্তের রঙে উৎসবের শেষ বেলায় এসেও বৃহস্পতিবারের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত বসন্ত উৎসব নিয়ে মুখ খুলে জল্পনা উসকে দিলেন বিতর্কিত গায়ক রোদ্দুর রায়।

মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত অভিযুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে পোস্ট করলেন বিতর্কিত গায়ক। এদিন সরকার ও রাজনৈতিক দলকে কাটগড়ায় তুলে তিনি বলেন, 'কয়েকজন তরুণ-তরুণী তারা নিজেদের শরীরকে, নিজেরা কিভাবে সাজাবেন তা নিয়ে আমরা তাদেরকে ধমকাচ্ছি। তারা খুন করেননি, ধর্ষণ করেননি, দেশ থেকে কোন বিশিষ্ট ধর্মের মানুষকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেবে তাও বলেন নি, তবুও আমরা তাদেরকে ধমকাচ্ছি। আসলে আমরা বুঝেছি তারা দুর্বল। তাই ওঁত পেতে বসে আছে ধমকানোর জন্য। কোন সময় তাদেরকে ধমকানোর সুযোগ পাবে।

তিনি আরো বলেন, 'তুমি ভ্যালেন্টাইন ডে'তে বন্ধু বান্ধবীর সাথে পার্কে যাবে, ওরা তোমাকে ধমকাবে। তুমি গান গাইবে তোমাকে ধামকাবে। তুমি কবিতা বলবে তোমাকে ধামকাবে। যে কোনো অজুহাতে ওরা তোমাকে ধমকাতে আসবে। আসলে যে ক্ষমতা যে পেশিশক্তি দেখানোর জন্য ওদেরকে ধমকাতে হবে। যখন রাষ্ট্র এটা করে তখন গোটা জাতির মাথা বিগড়ে যায়। তার চূড়ান্ত উদাহরণ বর্তমান সময়।
অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভ্যালেন্টাইন ডে'তে পার্কে আমরা কি পোশাক পরবো বা আমরা কি পোশাকে নিজেকে সজ্জিত করবো সেই অধিকার আমাদের নেই ? আমরা কি ভারতীয় নাগরিকরা ব্যক্তি মানুষের অধিকারকে সব সময় খর্ব করতে চাই ? আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের সমাজ আমাদের দেশে এমন এমন একটা পরিবেশ তৈরি করছি যেখানে ব্যক্তি মানুষের স্বাধীনতা সারাক্ষণ ধরে হস্তক্ষেপ করে চলেছি এটা কি আমাদের জাতীয় চরিত্র ?
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে বসন্ত উৎসবে কিছু বিতর্কিত ছবি ঘিরে সমালোচনার ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে, শাড়ি পরা কিছু মহিলার খোলা পিঠে আবির দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান বিকৃত করে অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে। অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে কয়েকজন যুবকের বুকেও। সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া সেই সব ছবি নিয়ে শুরু হয় তুমুল হইচই। ঘটনায় যে বিকৃত গায়কের গান নিয়ে হইচই হয় তিনিই হলেন রোদ্দুর রায়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ৫ ছাত্র ছাত্রী র বিরুদ্ধে সিঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনার ছয় দিনের মাথায় ফের ঘটনা প্রসঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে জল্পনাকে আরও উসকে দিলেন রোদ্দুর রায়।